থিম্পু ও দিলিস্ন সম্পর্কে অস্বস্তি

ভারতীয় পর্যটকদের ওপর চড়া কর চাপাচ্ছে ভুটান

এরপর থেকে প্রতিদিন অন্তত ২৫০ ডলার খরচ করতে হবে সম্পর্কে যে সন্দেহের ছায়া পড়তে শুরু করেছে এ সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভুটানের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র 'টাইগার্স নেস্ট'
ভুটান ভ্রমণে যেতে দীর্ঘদিন ট্যাক্সের (কর) ক্ষেত্রে যে বিশেষ ছাড় পেয়ে আসছিলেন ভারতীয় পর্যটকরা, সম্প্রতি তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভুটান সরকার। ফলে ভারতীয় পর্যটকদের এখন থেকে চড়া কর গুণতে হবে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেশটি ভ্রমণ করতে গেলে। এর ফলে ভারত-ভুটান সম্পর্ক কোন্‌ দিকে গড়াবে তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি দেশটির সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় পর্যটকদের এখন থেকে সেখানে বেড়াতে গেলে 'টু্যর অপারেটরদের' মাধ্যমে প্রতিদিন মাথাপিছু কমপক্ষে ২৫০ ডলার খরচ করতে হবে। এর মধ্যে সরকারের আরোপিত ৬০ ডলারের 'সাসটেনেবেল ডেভেলপমেন্ট ফি', থাকা-খাওয়ার খরচ বা 'এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার ফি' যুক্ত থাকবে। আগে এই খরচ কেবল অন্যান্য বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। ভুটানের পর্যটন করপোরেশনের সুপারিশে দেশটির মন্ত্রিসভা আগামী মাসেই এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করতে চলেছে বলে ভারত সরকারকে আগাম জানানো হয়েছে। ভারতের কোনো কোনো পর্যবেক্ষক মনে করছেন, নরেন্দ্র মোদির আমলে দিলিস্ন ও থিম্পুর মধ্যে সম্পর্কে যে সন্দেহের ছায়া পড়তে শুরু করেছে, এই সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন। ৭০ বছরের বেশি পুরনো 'ফ্রেন্ডশিপ ট্রিটি' বা মৈত্রী চুক্তি অনুযায়ী, ভুটানের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি ও বাণিজ্যে ভারতের প্রভাব দ্বিপক্ষীয়ভাবেই স্বীকৃত। আর সে কারণেই বিদেশি পর্যটকরা ভুটানে বেড়াতে গেলে প্রতিদিন যে অন্তত ২৫০ ডলার (১৮ হাজার রুপি) ফি দিতে বাধ্য ছিল, তা থেকে অব্যাহতি পেত ভারতীয়রা। ভারতীয়দের মতো একই সুবিধা ভোগ করতেন বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের নাগরিকরা। কিন্তু ভুটান সরকার এই ছাড় তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সপ্তাহে দিলিস্নতে গিয়ে এ বিষয়ে ভারত সরকারকে জানিয়ে গেছেন ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টান্ডি দোর্জি। সাবেক কংগ্রেস মন্ত্রী ও কূটনীতিক মণিশঙ্কর আইয়ার জানান, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি তার প্রথম বিদেশ সফরে ভুটানে গিয়ে জলবিদু্যৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভুটানকে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ যেমন কমিয়ে দিয়েছিলেন, তেমনি সহায়তা পাওয়ার শর্তও অনেক কঠিন করে তুলেছিলেন। সেই থেকেই থিম্পু ও দিলিস্নর মধ্যে অস্বস্তির শুরু বলে মনে করেন এই কূটনীতিক। তিনি বলেন, 'ভুটান সরকার ও সে দেশের রাজা তখন ভাবলেশহীন নীরবতা বজায় রাখলেও দেশটির গণমাধ্যমগুলো ভারতের ওপর ভুটানের অতিমাত্রার নির্ভরশীলতা নিয়ে সমলোচনায় মুখর হয়ে ওঠে।' মণিশঙ্কর আইয়ার আরও বলেন, 'ভারতীয়দের ওপর চড়া পর্যটন কর চাপানোয় আমি এতটুকুও বিস্মিত নই। মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের সম্পর্কে যে নানা সংঘাত দেখা দিচ্ছে, এটা আসলে তারই অবধারিত পরিণতি।'