রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের আগে সু চির পক্ষে সভা-সমাবেশ

গাম্বিয়ার করা মামলায় আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার শুরু হবে বহির্বিশ্বে সমালোচিত হলেও নিজ দেশে জনপ্রিয়তা তুঙ্গে সু চির

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইয়াঙ্গুনে সু চির সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ
রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে বিচারে নিজ দেশের হয়ে লড়ার প্রস্তুতি নেওয়া দেশটির 'স্টেট কাউন্সিলর' অং সান সু চির পক্ষে মিয়ানমারে তার সমর্থকরা ব্যাপক প্রচারণায় নেমেছে। চলতি ডিসেম্বরের ১০ তারিখ থেকে নেদারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে দায়ের করা মামলার বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স শুরু থেকেই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বরতার অভিযোগের বিরুদ্ধাচরণ করে আসছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি। তার এ ভূমিকার কারণে মিয়ানমারের শীর্ষ এ রাজনীতিকের মর্যাদা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তলানিতে নেমে গেছে। কিন্তু দেশের ভেতরে তিনি অতুলনীয় জনপ্রিয়তায় ভাসছেন। রোববারও তার কয়েকশ' সমর্থক দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের কেন্দ্রস্থলে সু চির সমর্থনে সমাবেশ ও প্রচার চালিয়েছে। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে ব্যক্তিগতভাবে লড়বেন, এ ঘোষণা দেওয়ার পর ইয়াঙ্গুনে তার সমর্থকরা এ নিয়ে তৃতীয় সমাবেশ করল। 'লাভ ইচ আদার' ও 'স্টপ দ্য হেইট' গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জনকারী মিয়ানমারেরর্ যাপ শিল্পী স পোয়ে কার সমাবেশে বলেন, 'অং সান সু চি হচ্ছেন এ বিশ্বের সবচেয়ে সাহসী নেতা।' সমাবেশের অন্যতম আয়োজক অং থু বলেন, 'অবশ্যই আমাদের একতা দেখাতে হবে। যদি একটি দেশটির নেতা লেবুকে মিষ্টি বলেন, তাহলে আমাদেরও একে মিষ্টি বলতে হবে।' ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় 'বিদ্রোহীদের' কথিত হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রতিবেশী দেশের সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। গত দুই বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে আখ্যা দেয় জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নালিশ গেছে। মুসলমান রাষ্ট্রগুলোর জোট ওআইসির সমর্থনে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া নভেম্বরে জাতিসংঘের আদালত আইসিজিতে মামলা করেছে। গাম্বিয়া তাদের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাসন ধ্বংসের কথা বলেছে। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে। তারা বলছে, গণহত্যা বা জাতিগত নিধনযজ্ঞ নয়, তাদের অভিযান নিরাপত্তা বাহিনীর টহল চৌকিতে হামলা চালানো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে আইসিজির ওই মামলার প্রথম শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে। 'মিয়ানমারের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায়' ওই মামলায় লড়তে কয়েকদিনের মধ্যেই সু চি নেদারল্যান্ডের রাজধানী দ্য হেগের উদ্দেশে রওনা হবেন বলে তার কার্যালয় নিশ্চিত করেছে।