যুক্তরাজ্যে নির্বাচন

তুমুল বাগ্‌যুদ্ধে বরিস-করবিন

গণভোটে অনড় করবিন, বরিসের চাই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন যুক্তরাজ্যের জন্য ব্রেক্সিট ধ্বংসাত্মক : বিবৃতি সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিতর্কে জেরেমি করবিন ও বরিস জনসন
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের আগে শুক্রবার চূড়ান্ত টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন। বিবিসি আয়োজিত এ বিতর্কে 'ব্রেক্সিট' ইসু্যতে তুমুল বাগ্‌যুদ্ধে জড়ান এই দুই নেতা। সংবাদসূত্র : বিবিসি বিতর্ক অনুষ্ঠানে জেরেমি করবিন বলেন, 'সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে আবারও গণভোটের মাধ্যমে ব্রেক্সিট ইসু্যর সমাপ্তি চায় লেবার পার্টি। অন্যদিকে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। নির্বাচনের ঠিক ছয় দিন আগে শেষ দফায় টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হন তারা। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতের এই বিতর্কে ব্রেক্সিট ইসু্যতে বিপরীতমুখী অবস্থান নেন এই দুই শীর্ষ নেতা। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড সীমান্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের প্রতিশ্রম্নতি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে আবারো গণভোটের মাধ্যমে ব্রেক্সিট ইসু্যর ইতি টানতে চায় লেবার পার্টি। দলটির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, 'লেবার পার্টি দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চায়। আমরা এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। সবাই নিরাপদবোধ করবে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ৪০ লাখের বেশি শিশু দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আমরা ঢেলে সাজাতে চাই। সবার জন্য বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। বয়স্কদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে চাই।' এ সময় 'চমৎকার চুক্তি'র মাধ্যমে ৩১ জানুয়ারির আগেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন কনজারভেটিভ দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেন, 'আগামী নির্বাচনের পর যুক্তরাজ্যে নতুন একটি অধ্যায় রচিত হবে। আমরা ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চাই। দেশের বর্তমান স্থবির অবস্থার অবসান চাই। সে লক্ষ্যেই দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হবে। অবকাঠামো, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।' যুক্তরাজ্যের জন্য ব্রেক্সিট ধ্বংসাত্মক আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন। পৃথিবীজুড়ে মানুষের চোখ এখন দেশটির নির্বাচন ও ব্রেক্সিটের দিকে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় নাগরিকদের জন্য এখন একটিই আলোচনার বিষয়; নির্বাচনে কোন দল জিতবে? এক দল রয়েছে ব্রেক্সিটের পক্ষে, অপর দল বিপক্ষে। যুক্তরাজ্যের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধানের বক্তব্যেও সেই চিত্র ফুটে উঠেছে। দুই নেতার টেলিভিশন বিতর্কের মধ্যেই এবার ব্রেক্সিট ইসু্যতে সোচ্চার হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীরা। শুক্রবার লন্ডনে ব্রেক্সিটবিরোধী প্রচারণায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন মেজর এবং টনি বেস্নয়ার। এ সময় যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষকে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তারা। দেশটির কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন মেজর এক বিবৃতিতে বলেন, বরিস জনসনকে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়া ঠিক হবে না। কারণ তিনি দ্রম্নত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে চান। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন যুক্তরাজ্যের জন্য শুধু ভুলই নয়, ভবিষ্যতের জন্য ধ্বংসাত্মক। অন্য এক বিবৃতিতে লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি বেস্নয়ার বলেন, বরিস জনসনকে বিশ্বাস করা যায় না। তাই লেবার পার্টিকে জয়ী করে সবার উচিত দ্বিতীয় রেফারেন্ডামের (গণভোট) মাধ্যমে ব্রেক্সিট বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।