ভারতে ধর্ষণের পর দগ্ধ

মৃতু্যর কাছে হেরে গেলেন উন্নাওয়ের সেই তরুণী

মৃতু্যর আগে যা বলে গেলেন নতুন এই 'নির্ভয়া' ওই তরুণীর বাড়িতে হাজির প্রিয়াঙ্কা, ধরনায় অখিলেশ

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ধর্ষণ মামলার শুনানিতে অংশ নিতে যাওয়ার পথে অভিযুক্তদের দেওয়া আগুনের সঙ্গে দুই দিনের লড়াইয়ের পর অবশেষে মৃতু্যর কাছে হেরে গেলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার সেই তরুণী। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ নাগাদ দিলিস্নর সফদরজং হাসপাতালেই মৃতু্য হয় তার। একদিন আগে বৃহস্পতিবার আদালতে যাওয়ার পথে তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তরা। সে সময় চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গেছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ উন্নাও জেলার ওই তরুণী চলতি বছরের মার্চে তার গ্রামের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। মামলার শুনানির জন্য গত বৃহস্পতিবার আদালতে যাচ্ছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি রেল স্টেশনে পৌঁছালে অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদিসহ পাঁচজন তাকে জোর করে একটি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানেই তারা তার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর পাঁচ দিন আগে শিবম জামিনে মুক্ত হয়। ধর্ষণে আরেক অভিযুক্ত শুভম ত্রিবেদিও ওই হামলাকারীদের মধ্যে ছিল বলে জানা গেছে। পরে পুলিশ এসে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লক্ষ্ণৌয়ের ট্রমা সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। পরে তাকে দিলিস্নর সফদরজং হাসপাতালে নেওয়া হয়। সফদরজং হাসপাতালের 'বার্নস অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি' বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শলভ কুমার বলেন, 'তিনি রাত ১১টা ১০ নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং আমরা তাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, তবে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রাত ১১টা ৪০ মিনিটে মারা যান তিনি।' ভারতে প্রায়ই যৌন সহিংসতার শিকার হয় নারীরা। ২০১৮ সালে থমসন ফাউন্ডেশনের এক জরিপ অনুযায়ী, নারীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ ভারত। 'অ্যাকটিভিস্টরা' বলছেন, নারীর বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। গত সপ্তাহে দেশটিতে বেশ কয়েকটি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। গত ২৭ নভেম্বর তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে ২৭ বছর বয়সী এক পশু চিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। নতুন নির্ভয়ার বাড়িতে হাজির প্রিয়াঙ্কা, ধরনায় অখিলেশ এদিকে, ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে গণধর্ষণের শিকার এই তরুণীর মৃতু্যর পর শনিবার সকালে উন্নাওয়ে তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র। এই ঘটনা নিয়ে পরিবারকে সান্ত্বনার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। কংগ্রেস নেত্রীর প্রশ্ন, 'উন্নাওয়ে এর আগেও এমন ঘটনা (ধর্ষণ) ঘটেছে। তারপরও কেন রাজ্য সরকার সতর্ক হলো না? কেন এবারের গণধর্ষণের শিকার তরুণীর জন্য নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি? আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে কেন প্রাণ হারাতে হলো?' অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভার সামনে শনিবার সকাল থেকেই ধরনায় (অবস্থান ধর্মঘট) বসেছেন উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ সিং যাদব। ধরনা শুরুর আগে নিহত তরুণীর জন্য দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গণধর্ষণ মামলার দ্রম্নত বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।