লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পেশ আজ

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পেশ হতে চলেছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব)। নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রম্নতি পূরণ করে, পাকিস্তান, আফগনিস্তান, বাংলাদেশের 'নিপীড়িত' সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত মোদি সরকার। 'সাম্প্রদায়িকতা' ও 'ধর্মনিরপেক্ষতা'র অবমাননার অভিযোগ এনে পাল্টা দিতে তৈরি বিরোধীরাও। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি গত বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ছাড়পত্র দিয়েছিল ওই বিলে। এরপর বৃহস্পতিবার বিলটি নিয়ে আলোচনার দিন স্থির করতে বৈঠকে বসে লোকসভার উপদেষ্টা কমিটি। বৈঠকে ঠিক হয়, বিলটি সোমবার লোকসভায় পেশ করবে সরকার। লোকসভায় সংখ্যার জোরে মোদি সরকার বিলটি সহজেই পাস করিয়ে নেবে। উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন অমিত শাহরা। বিজেপি শিবির নিশ্চিত, উভয়কক্ষেই বিল পাস করাতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। পার্লামেন্টে এ যাত্রা উৎরে গেলেও প্রশ্ন হলো, সংবিধানের 'অ্যাসিড টেস্টে' কি বিলটি আদৌ পাস হবে? কারণ দেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। সংবিধানের ১৪তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনের চোখে সবাই সমান। দেশটির ভৌগোলিক গন্ডির মধ্যে রাষ্ট্র কখনোই ধর্ম, জাত, বর্ণ, লিঙ্গ এবং জন্মস্থানের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করতে পারে না। কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেন, 'নাগরিকত্ব বিলে ঠিক উল্টোটাই হচ্ছে। অথচ, স্বাধীনতার সময়ে গান্ধী, নেহরু, মাওলানা আজাদ বা আম্বেদকররা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ধর্ম কখনোই নাগরিকত্ব পাওয়ার মাপকাঠি হতে পারে না। সেই কারণে বিলটি মৌলিক ভাবেই অসংবিধানিক।' বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, নাগরিক বিলে কোথাও সরাসরি বলা না হলেও পরোক্ষে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা শরণার্থীরা যদি মুসলমান হয়, তাহলে ভারতের নাগরিকত্ব পাবে না। যদিও সরকারের যুক্তি, প্রতিবেশী মুসলমান রাষ্ট্রগুলোতে মুসলমানরাই সংখ্যাগুরু। সেখানে ধর্মীয় পীড়নের শিকার হচ্ছে সংখ্যালঘু সমাজ। তারা প্রাণ বাঁচাতে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। তাই তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিকবার বলেছেন, 'প্রতিবেশী দেশে সংখ্যাগুরু সমাজ তো আর ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হচ্ছে না। হচ্ছে সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, পার্সি, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টানরা। তাদের কে আশ্রয় দেবে?' নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হচ্ছে, এই যুক্তি দেখিয়ে এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আসামের বিশিষ্টজনরা। তাদের অভিযোগ, ওই বিল অসাংবিধানিক।