ইরানকে ঘিরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র

জ্জ এক ঘণ্টায় ১০ হাজার টাগের্ট ধুলায় মেশানোর পরিকল্পনা

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়া ও নিষেধাজ্ঞা আরোপকে কেন্দ্র করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকি, কথার পারদ চড়ানোর পর এবার গোপন সামরিক পদক্ষেপে পা বাড়িয়েছে ওয়াশিংটন। তারই ধারাবাহিকতায় মাকির্ন সেনারা ইরানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। এমনভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে যেন ইরানের ১০ হাজার লক্ষ্যবস্তু (টাগের্ট) ধুলায় মিশিয়ে দিতে পারে ওয়াশিংটন। সংবাদসূত্র : ডেইলি স্টার ইউকে, আল-জাজিরা জানা গেছে, বিশ্বের ৪০টি স্থান ও পুরো মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইরানকে যুদ্ধবলয়ে ঘিরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মাকির্ন ঘঁাটি স্থাপন ও সেনা মোতায়েন করে এসব স্থানে অস্ত্রসজ্জায় সজ্জিত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ, সেনা ও বিমানবাহিনীর সেনা সদস্যরা। ইরানের চারদিকের দেশগুলোয় মাকির্ন সেনা উপস্থিতি রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সবদিক দিয়ে তেহরানকে কোণঠাসা করে দেয়ার মতো সক্ষমতা ওয়াশিংটনের রয়েছে। এর আগে ২০০৭ সালে লন্ডনের ‘এসওএএস’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ওই গবেষণাকেই কাজে লাগিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনও এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের পূবর্প্রান্তে অবস্থিত ইরানের চারপাশে ঘিরে থাকা দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের রণসজ্জা প্রস্তুত। কয়েক দশক ধরে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে রয়েছে ৬৯ হাজার মাকির্ন সেনা। ২০০১ সালের পর থেকে এ অঞ্চলে আধিপত্য আরও বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তান ও ইরাকে বহু আগে থেকেই দেশটির সেনা সদস্যরা রয়েছেন। ন্যাটোভুক্ত দেশ তুরস্ক, পাকিস্তান, কিরগিজস্তান ও ওমানে রয়েছে বিশ্ব পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। মাকির্ন পঞ্চম ফ্লিটের (নৌবহর) মূলঘঁাটি বাহরাইনে অবস্থিত। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সামরিক মহড়া ওই নৌবহর থেকেই পরিচালিত হয়। ‘নেভাল সাপোটর্ অ্যাক্টিভিটি বাহরাইন’ নামের ওই ঘঁাটি থেকে যুদ্ধবিমানবাহী ও ক্ষেপণাস্ত্রবাহী জাহাজও নিয়ন্ত্রিত হয়। সাড়ে চার হাজারের বেশি সেনা সজ্জিত ঘঁাটিটি ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধেও গুরুত্বপূণর্ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। গত বছর বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস ‘নিমিটজ’ থেকে পারস্য উপসাগরে ইরানের জাহাজে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। স্থলপথ ব্যবহার না করে ইরানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মাকির্ন বোমারু বিমান ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ইরানের ১০ হাজার লক্ষ্যবস্তুকে ধুলায় মিশিয়ে দিতে সক্ষম। এ ছাড়া শক্তিশালী বি-৫২ স্ট্রাটোফোরট্রিস ও বি-২ স্টিলথ বোম্বারসহ দুই শতাধিক বোমারু বিমানের বহর ও ক্রুজ মিসাইল প্রস্তুত রেখেছে মাকির্ন নৌবাহিনী। বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানগুলো প্রতি ২২ সেকেন্ডে ৮০টি বোমা ফেলতে সক্ষম। ইরানের সবোর্চ্চ ধমীর্য় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা, যুদ্ধ কোনোটিই নয়Ñ এমন মন্তব্য করার পর এই খবর প্রকাশ্যে এলো। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বতর্মান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে যেকোনো ধরনের আলোচনা নাকচ করে দেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা, যুদ্ধ কোনোটিই নয়।’ আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সোমবার বলেন, ‘আমরা যদি কখনো আলোচনা করিও, যেটা প্রায় অসম্ভব- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা, এটি কখনোই বতর্মান প্রশাসনের সঙ্গে হবে না।’ উল্লেখ্য, দেশটির রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে চ‚ড়ান্ত মত দেয়ার অধিকার আছে খামেনির।