তেহরানে বিমান বিধ্বস্ত

ট্রাম্পেরও দায় দেখছেন ট্রুডো

জ্জ 'যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তৈরি না করলে হয়তো বেঁচে যেতেন যাত্রীরা' জ্জ বিমান ভূপাতিতের ঘটনায় কয়েকজন আটক জ্জ ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে বসতে চায় ইউরোপ

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও ইরানের রাজধানী তেহরানে ইউক্রেনীয় যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও দায় দেখছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। মঙ্গলবার ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যদি সাম্প্রতিক উত্তেজনা তৈরি না করতো, তাহলে ওই বিমানের যাত্রীরা বেঁচে থাকতেন। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি কানাডার প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমি মনে করি, যদি কোনো উত্তেজনা না থাকতো, ওই অঞ্চলের উত্তেজনা না বাড়তো, তাহলে বিমানের আরোহীরা এখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়িতেই থাকতেন।' তিনি আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য অ-পারমাণবিক ইরানের খুব, খুবই প্রয়োজন। কিন্তু একই সঙ্গে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকান্ডের কারণে যে উত্তেজনা; সেটিরও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।' গত বুধবার তেহরান থেকে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বোয়িং-৭৩৭ বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়। এতে ওই বিমানের ১৭৬ আরোহীর সবাই মারা যান। নিহত যাত্রীদের অন্তত ৫৭ জন কানাডার নাগরিক; যাদের অনেকের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের মার্কিন-ইরান দ্বন্দ্বে প্রচন্ড উত্তেজনা দেখা দেয় গত সপ্তাহে। ওই সময় ইরাকের বাগদাদে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের বিপস্নবী গার্ড বাহিনীর বিদেশি সশস্ত্র শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর এই উত্তেজনায় পারদ চড়ে। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের কাছে থেকে পরিষ্কার এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য দাবি করে আসছেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার সময় তিনি এই দাবি জানিয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। এ ধরনের রোমহর্ষক নির্মমতা কীভাবে ঘটল, সে ব্যাপারে আমাদের পূর্ণাঙ্গ পরিষ্কার ব্যাখ্যা দরকার।' বিমান বিধ্বস্তে নিহত প্রত্যেক কানাডীয় নাগরিকের জন্য ইরানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। কানাডার এক পরিসংখ্যান বলছে, উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে অন্তত দুই লাখ ১০ হাজার ইরানি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক বসবাস করছেন। এদিকে, ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার ইরানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে বসতে চায় ইউরোপ ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। গত সপ্তাহে তেহরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। ইউরোপীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নে চুক্তির সংকট নিরসনে প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার আওতায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চুক্তির অপর দুই পক্ষ রাশিয়া ও চীন এবং ইরানকে বিষয়টি অবহিত করবে। এরপর সংকট সমাধানের জন্য ১৫ দিন সময় পাওয়া যাবে। অবশ্য আলোচনার মাধ্যমে এই সময়ের মেয়াদ বাড়ানো যাবে। এই সময়ের মধ্যে সংকটের সমাধান না হলে ইরানের ওপর যথারীতি জাতিসংঘের আগের প্রস্তাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপিত হয়ে যাবে। সাত মাস আগে সোলাইমানি হত্যায় অনুমোদন দিয়েছিলেন ট্রাম্প সাত মাস আগেই ইরানের কুদস বাহিনীর প্রধান কাসেম সোলাইমানিকে হত্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে মঙ্গলবার মার্কিন গণমাধ্যমে নতুন খবর চাউর হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পাঁচ সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বরাতে এদিন গণমাধ্যম জানায়, যদি ইরানের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনে কোনো মার্কিনির মৃতু্য হয়; তবেই সোলাইমানিকে হত্যায় কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযান পরিচালনা করা যাবে, এমন ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প।