তেহরানে বিমান ভূপাতিত

সেনাবাহিনীকে সমর্থন খামেনির

জ্জ 'যুক্তরাষ্ট্রের দম্ভে আঘাত হেনেছে বিপস্নবী গার্ডস বাহিনী' জ্জ ক্ষতিপূরণের দাবিতে ইরানের ওপর চাপ বৃদ্ধি

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনি
ভুল করে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করে ১৭৬ জন নিহতের ঘটনায় ইরানের সেনাবাহিনীর সমালোচনা না করে বরং সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনি। ৮ বছর পর জুমার নামাজে ইমামতি করার আগে খুতবায় এই সমর্থন জানান তিনি। এদিকে, নিহত বিমানযাত্রীদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে তেহরানের ওপর আরও চাপ বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, যত দিন পর্যন্ত এই ঘটনার সব উত্তর ইরান দেবে না, ততদিন পর্যন্ত তাদের ছাড়া হবে না। উলেস্নখ্য, ইরান ছাড়াও পাঁচ দেশের যাত্রী ছিলেন ইউক্রেনের ওই বিমানে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, ডয়চে ভেলে, এএফপি বিমান ভূপাতিতের ঘটনায় দেশ ও বিদেশে বড় ধরনের বিক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে রয়েছে ইরান। তবে এই ঘটনার জন্য দায়ী ইরানের বিপস্নবী গার্ডস বাহিনী (আইআরজিসি) দেশটির নিরাপত্তা সুরক্ষিত করেছে বলে দাবি করেছেন খামেনি। ২০১২ সালের পর জুমার নামাজে হাজির হয়ে খামেনি বলেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে আইআরজিসি যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছিল, তা যুক্তরাষ্ট্রের সম্মান-মর্যাদায় আঘাত করেছে। নিজেকে পরাশক্তি দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র যে অহঙ্কার দেখায়, আইআরজিসির ক্ষেপণাস্ত্র তাদের সেই দম্ভে আঘাত করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, 'তারা এখন বলছে আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করবে। কিন্তু এসবের মাধ্যমে তারা তাদের হারানো সম্মান ফিরে পাবে না।' ভাষণে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের শত্রম্ন উলেস্নখ করে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান খামেনি। তিনি দাবি করেন, কাসেম সোলাইমানি হত্যা আড়াল করতে শত্রম্নরা বিমান ভূপাতিত করার ঘটনাকে ব্যবহার করছে। খামেনির দাবি, 'বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আমরা শোকাহত হলেও শত্রম্নরা খুশি হয়েছে। কারণ তারা ইরানের বিপস্নবী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু একটা বলার মতো বিষয় পেয়েছে।' ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ইরানকে এদিকে, বিমান ধ্বংসে মৃত প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ইরানকে, বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এমন দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। বৃহস্পতিবার লন্ডনে কানাডার দূতাবাসে মিলিত হয়েছিলেন কানাডা, ইউক্রেন, সুইডেন, আফগানিস্তান এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা। মৃত যাত্রীদের প্রতি শোকপ্রস্তাব জানিয়ে তারা একটি বৈঠক করেন। পরে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে তারা জানান, মৃত যাত্রীদের পরিবার সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তেহরানকে। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের সুযোগ করে দিতে হবে। যে তদন্তে অংশ নেবেন এই পাঁচ দেশের প্রতিনিধিরা। তাদের বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত বিমানে হামলা চালানোর বিষয়টি ইরান স্বীকার করলেও এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর তারা দিচ্ছে না। যতদিন পর্যন্ত সেই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে না, ততদিন তেহরানের ওপর চাপ বজায় রাখা হবে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে গত ৩ জানুয়ারি ইরানের অন্যতম জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রতু্যত্তরে ইরাকে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। তখনই তেহরান থেকে ওড়া একটি ইউক্রেনের বিমান দুই ক্ষেণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য ইরান ক্ষেপণাস্ত্রের কথা স্বীকার করেনি। জানিয়েছিল, যান্ত্রিক ত্রম্নটির কারণেই বিমানটি ভেঙে পড়েছে। কিন্তু পরে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের চাপে তেহরান স্বীকার করে নেয়, ক্ষেপণাস্ত্র লেগেই বিমানটি ধ্বংস হয়েছে। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ইরানের ওপর চাপ তৈরি করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।