সোলাইমানির ঘনিষ্ঠ আরেক কমান্ডারকে হত্যা

ম 'মার্কিনিদের মারলে উত্তরসূরিরও সোলাইমানির পরিণতি হবে'

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আবদুল হোসেইন মোজাদ্দামি
মার্কিন ড্রোন হামলায় কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি হত্যার ধাক্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইরান। আর এরই মধ্যে সোলাইমানির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দেশটির অভিজাত ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আরেক শীর্ষ কমান্ডার আবদুল হোসেইন মোজাদ্দামিকে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খুজেস্তানের দারখোভিন নামক শহরে নিজ বাড়ির সামনে মাথায় গুলি করে মোজাদ্দামিকে হত্যা করে অজ্ঞাত দুই বন্দুকধারী। মোজাদ্দামি ছিলেন আইআরজিসির বাসিজ ফোর্সের প্রভাবশালী কমান্ডার এবং সোলাইমানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সংবাদসূত্র : রয়টার্স ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আইআরএনএর (ইরনা) বরাতে বলা হয়েছে, দারখোভিন শহরে দুই মোটরসাইকেল আরোহী বাসিজ কমান্ডার আবদুল হোসেইন মোজাদ্দামিকে তার বাড়ির সামনে গুলি করে পালিয়ে যান। মাথায় গুলি লাগার কারণে ঘটনাস্থলেই মৃতু্যবরণ করেন তিনি। মোজাদ্দামি আইআরজিসির বাসিজ ফোর্সের প্রভাবশালী কমান্ডার ছিলেন। আইআরজিসির মোট পাঁচটি ফোর্সের মধ্যে বাসিজ ফোর্স একটি। ইরানের অভ্যন্তরীণ যেকোনো আন্দোলন দমাতে এই ফোর্স ব্যবহার করা হয়। মূলত স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের নিয়ে এই বাহিনীটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার ও দেশটির দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে। তারপর থেকে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে, যা মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছে। মার্কিনিদের মারলে উত্তরসূরিরও সোলাইমানির 'পরিণতি হবে' এদিকে, ড্রোন হামলায় নিহত কাসেম সোলাইমানির উত্তরসূরি যদি মার্কিনিদের মারার একই পথ অনুসরণ করেন তাহলে তাকেও নিহত ইরানি কমান্ডারের পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইরান বিষয়ক বিশেষ দূত ব্রায়ান হুক। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে আরবি ভাষার দৈনিক আশরাক আল-আওসাতকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর ওপর ইরানঘনিষ্ঠ মিলিশিয়াদের ধারাবাহিক হামলার পেছনে সোলাইমানিই মূল পরিকল্পক ছিলেন বলে ওয়াশিংটন অভিযোগ করে আসছে। ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল; এরই এক পর্যায়ে চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোলাইমানির ওপর ড্রোন হামলার নির্দেশ দেন। মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের প্রভাব বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা কুদস বাহিনীর কমান্ডার নিহতের প্রতিক্রিয়ায় ইরাকের দুটি সামরিক ঘাঁটির মার্কিন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান; যদিও তাতে কোনো মার্কিন সেনা নিহত হয়নি বলে দাবি পেন্টাগনের। সোলাইমানির মৃতু্যর পরপরই ইরান কুদস বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ইসমাইল ঘানিকে দেশটির বিপস্নবী রক্ষীবাহিনীর বিদেশি শাখাটির নতুন প্রধান নিযুক্ত করে। দায়িত্ব নিয়ে নতুন কমান্ডার ঘানিও সোলাইমানির দেখানো 'আলোকজ্জ্বল পথেই' হাঁটার কথা জানিয়ে মার্কিন বাহিনীকে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়া করাই 'মূল লক্ষ্য' বলে ঘোষণা করেন।