করোনাভাইরাস আতঙ্কে চীনে মাস্কের তীব্র সংকট

এমন পরিস্থিতিতে পণ্যগুলোর দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৩৬

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের এখনো কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। এখন প্রতিরোধই এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। তবে সেদিক থেকেও নতুন বিপদ দেখা দিয়েছে চীনে। ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় মানুষজন ব্যাপক হারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনার কারণে এসব জিনিসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংবাদসূত্র: সিনহুয়া, বিবিসি চীনে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এ কারণে হুট করেই চাহিদা বেড়ে গেছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ, থার্মোমিটারের মতো চিকিৎসা সামগ্রীর। এরই মধ্যে দেশটিতে তাওবাও-জেডি ডটকমের মতো পণ্যকেনার অনলাইন সাইটগুলোতেও মজুত শেষ হয়ে গেছে মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজারের। গত সপ্তাহে মাত্র দুই দিনে প্রায় আট কোটি মাস্ক বিক্রি করেছে আলিবাবার মালিকানাধীন তাওবাও। জানুয়ারির ১৯ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে জেডি ডটকম মাস্ক বিক্রি করেছে অন্তত ১২ কোটি ৬০ লাখ পিস। এ ছাড়া তাদের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের স্টকও শেষ হয়ে গেছে। বিক্রি বেড়েছে থার্মোমিটার, চশমাসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের ওষুধেরও। এই সংকট মোকাবিলায় বেশির ভাগ মাস্ক কারখানাগুলো চীনা নববর্ষ উপলক্ষে ছুটিতে থাকা কর্মীদের ডেকে পাঠিয়েছে। অনেক কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে দিনরাত কাজ চলছে। তাওবাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রেতাদের জানিয়েছে, এই সংকট সাময়িক। শিগগিরই তাদের মজুত আবার পূরণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমন পরিস্থিতিতে মাস্কের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও তারা ক্রেতাদের আশ্বস্ত করেছে, এমন দুর্যোগের মুহূর্তে কিছুতেই পণ্যের দাম বাড়াবে না তারা। তবে মজুতই যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে সীমিত দাম কতটুকু উপকার করবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের। শুধু চীনই নয়, প্রতিবেশী দেশ জাপান-থাইল্যান্ডেও চিকিসা সামগ্রীর মজুতের অবস্থাও অনেকটা একই। একজন সর্বোচ্চ ১০টি মাস্ক কিনতে পারবে বলে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে ম্যাকাও। আবার অনেক দেশই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় নিজেদের মজুত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। নিজ দেশের নাগরিকদের সুরক্ষায় তাইওয়ান আগামী এক মাসের জন্য মাস্ক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষদের থেকে দূরে থাকাই মাস্কের চেয়ে ভালো বিকল্প হতে পারে। এজন্য উহানের লোকজন থেকে মার্কিন নাগরিকদের দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এশিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ধারণার চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্করভাবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সামান্য হাঁচি, কাশি, কফের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। উলেস্নখ্য, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। এ ছাড়া নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এর উৎস হচ্ছে উহান শহরে সামুদ্রিক খাবারের পাইকারি বাজার। ধারণা করা হচ্ছে, বেলুগা তিমির মতো সমুদ্রগামী কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী এই ভাইরাস বয়ে এনেছে। তবে বাজারে অহরহ বিচরণ করা মুরগি, বাদুড়, খরগোশ, সাপের মতো প্রাণীগুলোও সন্দেহের বাইরে নয়।