পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়ও পাস সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব

সায় বাম-কংগ্রেস বিধায়কদের

প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারতের কেরালা, রাজস্থান, পাঞ্জাবের পর এবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভায় পাস হলো সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রস্তাব। এর পক্ষে সায় ছিল বাম, কংগ্রেস বিধায়কদের। তবে এক্ষেত্রে কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। আর সিএএ-বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিজেপি। শেষমেশ বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থনে গৃহীত হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী প্রস্তাব। সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পেশ হলেও সোমবার প্রস্তাবের পক্ষে ভোটাভুটিতে অংশ নেননি বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। সংবাদসূত্র : কে-২৪ নিউজ, এনডিটিভি প্রস্তাব উত্থাপনের পর যতই এর বিরোধিতা করতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা, ততই কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধিতায় সুর চড়াতে থাকেন তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেসের বিধায়করা। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আঁতাতের অভিযোগ তুলে বিধানসভায় সরব হতে দেখা যায় বাম-কংগ্রেস বিধায়কদের। পালটা প্রতিবাদ করতে থাকেন তৃণমূলের বিধায়করা। এমনকি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতাও বাম-কংগ্রেসের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। একই সঙ্গে সিএএ-বিরোধী প্রস্তাবে কোনো সংশোধনী না আনার জন্য বাম-কংগ্রেস বিধায়কদের অনুরোধ করেন। কদিন আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী প্রস্তাব পাস করানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করতে দেখা যায় কংগ্রেসকে। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী এই ইসু্যতে প্রশংসা করেন মমতার। উল্টো দিকে, বামপন্থিরা সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস নিয়ে সমালোচনা করতে শুরু করেন রাজ্য সরকারকে। মুখে বিরোধিতা করলেও কেন বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাসে সরকার দেরি করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন সিপিএম নেতৃত্ব। এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, সোমবার রাজ্য বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী প্রস্তাব পাস করানো হবে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুরে বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পেশ করা হয়। এরপর সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থনে প্রস্তাব গৃহীত হয় বিধানসভায়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুরু থেকেই কেন্দ্র-বিরোধিতায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে সিএএ বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। অন্য রাজ্যগুলোকেও সিএএ ইসু্যতে একজোট হতে আহ্বান জানান মমতা। এর মধ্যেই সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে বাম শাসিত কেরালায়। এমনকি ভারতের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে নাগরিকত্ব আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের করেছে কেরালা। নাগরিকপঞ্জি নিয়েও কেন্দ্র বিরোধিতায় অনড় পিনারাই বিজয়নের সরকার। এ নিয়ে কোনো কাজে যুক্ত হলে সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে ডিসিপিস্ননারি অ্যাকশন নেওয়ারও হুশিয়ারি দিয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। পাঞ্জাবের বিভিন্ন এলাকায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলনে শামিল হয় রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে একাধিক সংগঠন। তারপরই পাঞ্জাবে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার সিএএ বিরোধিতায় প্রস্তাব পাস করেছে বিধানসভায়। তার দিন কয়েক পরেই রাজস্থানের অশোক গেহলটের সরকারও সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস করেছে। এবার ওই একই পথ ধরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস করানোর উদ্যোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের।