হাজার হাজার মানুষ পালাচ্ছে সিরিয়ার ইদলিব থেকে

বাশার বাহিনীর অভিযান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলা হলেও বেসামরিক এলাকাও ধ্বংস হচ্ছে রুশ-মার্কিন সেনা সংঘর্ষে যুদ্ধের শঙ্কা সিরিয়ায়

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী অধিকৃত ইদলিবসহ অন্যান্য অঞ্চল পুনরুদ্ধারে বাশার আল-আসাদ বাহিনী নতুন করে অভিযান শুরু করার পর ওই এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ তুরস্কের সীমান্তের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি বাহিনীর ব্যাপক বিমান হামলার মুখে এসব লোকজন পালাচ্ছে বলে ত্রাণ সংস্থার কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি গৃহযুদ্ধের প্রায় ৯ বছরে দেশটির বিভিন্ন অংশ থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ লোক বিদ্রোহী অধিকৃত ইদলিব প্রদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন রাশিয়ার বাহিনীর ছত্রছায়ায় প্রদেশটি পুনরুদ্ধার করার পদক্ষেপ জোরদার করেছে প্রেসিডেন্ট বাশারের অনুগত সরকারি বাহিনী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী 'সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস' জানিয়েছে, সরকারি বাহিনী শুক্রবার থেকে ২২টি শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে এবং ইদলিবের ভেতর দিয়ে যাওয়া জাতীয় একটি মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইদলিব শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দক্ষিণের মারাত আল-নুমান শহর ঘেরাও করে ফেলেছে এবং শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর্যায়ে আছে বলে অবজারভেটরি জানিয়েছে। বাশারের পুরো সিরিয়া পুনরুদ্ধার করার উদ্যোগের ক্ষেত্রে মারাত আল-নুমানের পতন একটি বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হবে। 'সিভিল ডিফেন্স' বাহিনীর এক কর্মী বলেন, 'মারাত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরটির বাস্তুচু্যত বাসিন্দারা অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনযাপন করছে।' মস্কো ও দামেস্ক জানিয়েছে, তারা আলেপ্পোর বেসামরিকদের ওপর হামলা জোরদার করা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বিমান হামলায় হাসপাতাল, স্কুল ও অন্যান্য বেসামরিক এলাকাগুলোও ধ্বংস হচ্ছে। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় 'ভায়োলেট' সংস্থার ত্রাণ কর্মী ফৌয়াদ সায়েদ ইসা বলেন, 'গত কয়েকদিনে আমরা নতুনভাবে বাস্তুচু্যত হওয়া কয়েক হাজার লোক দেখেছি এবং গত চার দিনে কম করে হলেও প্রায় ৫০ হাজার লোক বাস্তুচু্যত হয়েছে।' অবজারভেটরির হিসাবে গত ১২ দিনে আলেপ্পো ও ইদলিব শহরের আশপাশের গ্রামগুলো থেকে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার লোক পালিয়ে গেছে। এদের অধিকাংশই সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে গেছে বলে ত্রাণ কর্মীরা জানিয়েছেন। রুশ-মার্কিন সেনা সংঘর্ষে যুদ্ধের শঙ্কা সিরিয়ায় এদিকে, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় হাসাকা প্রদেশের তাল আমর এলাকায় রাশিয়া এবং মার্কিন সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর ফলে অঞ্চলটিতে নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ মূলত কুর্দি গেরিলাদের হাতে এবং সেখানে মার্কিন সেনারা অবস্থান করছে। অন্যদিকে, তাল আমর এলাকার তেল খনি থেকে মার্কিন সেনারা তেল চুরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরটির প্রবেশ মুখে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তেল ক্ষেত্রে যাওয়ার মহাসড়কে কৌশলগত এই শহরের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর তাদের সামরিক যানগুলো দু'দিকে চলে যায়। তবে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর ওই এলাকায় রাশিয়ার হেলিকপ্টার এবং মার্কিন যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা গেছে।