‘ছোট তবে শক্তিশালী’ মন্ত্রিসভা গঠন করলেন ইমরান

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অথর্মন্ত্রী আসাদ ওমর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি, মানবাধিকার বিষয়কমন্ত্রী ড. শিরিন মাজারি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খাট্টা (ছবি ঘড়ির কঁাটার আদলে)
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার একদিন পরই রোববার ইমরান খান দেশের জন্য নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। ২১ সদস্যের মন্ত্রিসভায় ১৬ জন মন্ত্রী ও পঁাচজন উপদেষ্টা রয়েছেন। নতুন মন্ত্রিসভাকে পাকিস্তানের কোনো কোনো গণমাধ্যম ‘ছোট তবে শক্তিশালী’ বলে মন্তব্য করেছে। সংবাদসূত্র : পাসর্ টুডে, ডন, ইনডিয়া টুডে ইমরান খানের মন্ত্রিসভায় যেসব ব্যক্তি ঠঁাই পেয়েছেন, তাদের এক-তৃতীয়াংশ সাবেক সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। এসব ব্যক্তি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পযর্ন্ত পাকিস্তানের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে সাতজন সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফের আমলে এবং দুইজন পাকিস্তান পিপলস পাটির্ বা পিপিপি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। নতুন মন্ত্রিসভা আজ শপথ নেবে। ১৬টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই দলের মিত্রদের ছয়টি মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার সদস্য পালাের্মন্ট ও সিনেটের মোট সদস্যের শতকরা ১১ ভাগের বেশি হতে পারবে না। সেই হিসাবে ইমরান খান তার মন্ত্রিসভায় মোট ৪৯ জন মন্ত্রী নিয়োগ দিতে পারবেন। পিটিআই দলের একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, প্রয়োজন অনুযায়ী মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়তে পারে। ইমরানের মন্ত্রিসভায় আসাদ ওমরকে অথর্মন্ত্রী, পিটিআই ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কোরেশিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খাইবার-পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাট্টাককে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ড. শিরিন মাজারিকে মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে শাহ মেহমুদ কোরেশি আগে পিপিপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া, ড. ফাহমিদা মিজাের্ক আন্ত-প্রাদেশিক সমন্বয় বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। চৌধুরী তারিক বশির পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে প্রধানমন্ত্রীসহ তারা মেয়াদ পূণর্ করতে পারেন কিনা, এ নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কারণ পাকিস্তানের ইতিহাস বলছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদটি যেন ‘ফুটন্ত কড়াই’! কেউই টিকতে পারেন না। এর পক্ষে একটি উদাহরণই যথেষ্ট। ৭১ বছর বয়সী দেশটির কোনো বেসামরিক প্রধানমন্ত্রীই এখন পযর্ন্ত পঁাচ বছরের পুরো মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি। ইমরান খান দেশটির ২২তম প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে নওয়াজ শরিফ তিন, আর বেনজির ভুট্টো দুই দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বলাই বাহুল্য, তারা কোনোবারই পঁাচ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি। কখনো সরাসরি সামরিক অভ্যুত্থান, কখনো বা বিচার বিভাগকে সামনে রেখে সেনাবাহিনীর কলকাঠি নাড়ায় পদ ছাড়তে হয়েছে ইমরানের পূবর্সূরি ২১ জনকে। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারতের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, পাকিস্তানের পরদিন জন্ম নেয়া ভারতে এখন পযর্ন্ত ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ১৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নরেন্দ্র মোদি। আর এই সময়ে বতর্মান থেরেসা মে-সহ যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোট ১৫ জন। বিশ্লেষকদের ভাষ্য, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন বিশ্বের সবচেয়ে কঠিনতম কাজ!