করোনা আতঙ্ক :লন্ডনের চায়না টাউন জনশূন্য

যুক্তরাজ্যে চার লাখ মানুষের মৃতু্য হতে পরে!

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
এমনই জনশূন্য লন্ডনের চায়না টাউন
প্রথম করোনাভাইরাসে এক রোগী শনাক্ত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ব্যস্ততম শহর চায়না টাউন বলতে গেলে খালি হয়ে গেছে। ব্যস্ততম এই শহরটি এখন পথচারীশূন্য। গত বুধবার চীন থেকে লন্ডনে ফেরা এক নারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পথে বের হওয়া থেকে বিরত রয়েছেন পর্যটক ও বাসিন্দারা। সংবাদসূত্র : ডেইলি মেইল, ডেইলি স্টার ইউকে চীনের উহান শহরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করার পর যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত ৯ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গত বুধবার লন্ডনে এক নারী এই ভাইরাসে আক্রান্তের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। আর লন্ডনে এই প্রথম কোনো ব্যক্তিকে করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি চীন থেকে এসেছেন। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, চীনে আক্রান্ত হওয়ার পরই ওই নারী লন্ডনে এসেছেন। তবে সবচয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির 'ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস' বিভাগের কর্মকর্তাদের এক স্বীকারোক্তির কারণে। তারা জানান, ভাইরাস আক্রান্ত ওই নারীকে উবার ট্যাক্সির মাধ্যমে ব্যস্ততম এলাকার মধ্যদিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। লন্ডনে প্রথম কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্তের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চীনা-অধু্যষিত চায়না টাউন এখন পথচারীশূন্য। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। চীনা নাগরিক পরিচালিত শপিং মলগুলোও এখন পর্যটকশূন্য। অথচ অন্য সময় সেন্ট্রাল লন্ডনের এই শহরটিতে পর্যটক ও স্থানীয়দের ভিড় লেগেই থাকে। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, করোনাভাইরাস সন্দেহে বৃহস্পতিবার দেশটির ৭৫০ জন রোগীকে পরীক্ষা করা হয়েছে। আর একদিনে পরীক্ষা করানোর এই সংখ্যা অনেক বেশি। যে কারণে মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বেড়েছে। এক জরিপে দেখা গেছে, ১৪ শতাংশ যুক্তরাজ্যবাসী বলেছেন, করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে তারা চীনা ব্যক্তিদের সংস্পর্শ ত্যাগ করবেন। এক-চতুর্থাংশ বলেছেন, তারা করমর্দন এড়িয়ে চলবেন। এক-পঞ্চমাংশ বলেছেন, তারা গণপরিবহনে চলাচল পরিহার করবেন। প্রতি ১০ জনের তিনজন বলেছেন, তারা বড় ধরনের জমায়েত বা ছুটি কাটাতে বিমান ভ্রমণ পরিহার করবেন। দুই-তৃতীয়াংশ ব্যক্তি আক্রান্ত দেশ বা এলাকা থেকে দূরে থাকতে চান। যুক্তরাজ্যে চার লাখ মানুষের মৃতু্যর আশঙ্কা! প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাজ্যে প্রায় চার লাখ মানুষের মৃতু্য হতে পারে। এ ছাড়াও এই ভাইরাসে আরও কয়েক মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। 'ইম্পেরিয়াল কলেজ' লন্ডনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রফেসর নেইল ফারগুসোন বলেন, 'আমরা যেটা জানি না, সেটা হলো- সবাই যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কত মানুষ মারা যাবে। কী অনুপাতে মারা যাবে এবং এর ঝুঁকি কী? আমাদের করা হিসাব অনুযায়ী, যারা আক্রান্ত হবেন, তাদের মধ্যে এক শতাংশ মারা যাবেন। আর এর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় চার লাখ। আমি বলতে পারি না যে, এমনটি হলে আমরা হিমশিম খাবো না।'