করোনার তথ্য গোপন করলে মৃতু্যদন্ড

চীনা আদালতের নোটিশ কিছু ক্ষেত্রে ১০ বছরের কারাদন্ড, যাবজ্জীবন সাজাও হতে পারে হুবেইতে যানে নিষেধাজ্ঞা উহান থেকে ১৭৫ জনকে ফেরাল নেপাল

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাভাইরাসের লক্ষণ সম্পর্কিত কোনো ভুল তথ্য দিলে, কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য গোপন করলে সেটিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। আর এই অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মৃতু্যদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। প্রাণঘাতী কভিড-১৯ করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত চীনের একটি আদালত শনিবার এমন নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ জারি করেছে। সংবাদসূত্র : সিনহুয়া, বিবিসি আদালতের জারিকৃত ওই নোটিশে বলা হয়, কেউ যদি ভ্রমণের তথ্য গোপন করে, তাহলে সেটিও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়া করোনাভাইরাসের বিস্তারের জন্য কোনো নাগরিক বিপজ্জনক উপায়ে জননিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেললে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে বিধি-বিধান লঙ্ঘনকারীদের ১০ বছরের কারাদন্ড, যাবজ্জীবন অথবা মৃতু্যদন্ডের সাজাও হতে পারে। এদিকে, শনিবার দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন কোনো নাগরিক সর্দি, কাশি, জ্বর অথবা অন্য কোনো ধরনের অসুস্থতা নিয়ে সড়ক, রেল অথবা আকাশপথে চলাচল করতে পারবেন না জানিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৬৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৯ হাজার। নববর্ষের দীর্ঘ ছুটি শেষে শহরগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে চীনের মানুষ। কেউ নতুন করে ফিরে গেলে তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে স্বেচ্ছায় বা পর্যবেক্ষণে এই সুরক্ষা নিতে হবে তাদের। নির্দেশ অমান্যকারীদের আইনের মুখোমুখি এবং শাস্তি পেতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। হুবেইতে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা অন্যদিকে, চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারি ছড়িয়ে পড়া রোধে হুবেই প্রদেশে সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রোববার রাজ্যজুড়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রাদেশিক সরকার। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ও জনসেবা প্রদানকারী যানবাহন। ওই প্রদেশের সব বাসিন্দা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে সরকার। প্রাদেশিক সরকারের অনুমতি ছাড়া সেখানে কোনো কোম্পানি তাদের কার্যক্রম আপাতত শুরু করতে পারবে না। এছাড়া চীনের মূল ভূখন্ডে প্রবাহিত ঠান্ডা বাতাসে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস হংকংয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে দেশটির একজন আবহাওয়াবিদ এই গুজবকে ভিত্তিহীন বলে পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বার্তায় বলা হয়েছে, চীনের গুয়াংডং প্রদেশে চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রদেশে তাপমাত্রা নিচে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। সেই সময় উহানে উৎপত্তি হওয়া নতুন করোনাভাইরাস হংকংয়ে ব্যাপকমাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে ব্যাপকভাবে এই গুজব ছড়িয়েছে। এতে বলা হচ্ছে, হংকং থেকে ৯০০ কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত হুবেই প্রদেশের উহান থেকে এই ঠান্ডা বাতাস হংকংসহ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ে আসবে। গুজব বিস্তারকারীরা বলছেন, এই সময়ের মধ্যে হংকংয়ে তীব্র বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। উহান থেকে ১৭৫ জনকে ফেরাল নেপাল এদিকে, করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের উহান শহর থেকে ১৭৫ জনকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে নেপাল। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাহেন্দ্র শ্রেষ্ঠা বলেন, রোববার ভোররাতে ১৩৪ পুরুষ ও ৪১ নারীকে নিয়ে নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। উহানে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ফেরাতে তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখানোর পর সেখানে আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নিল নেপাল। ফেরত আসা নেপালিদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন শ্রেষ্ঠা। দেশে ফেরা এই নাগরিকদের রাজধানীর কাছে ভক্তপুর শহরে দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।