বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের কাছে ফের রকেট হামলা

তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৯ বার আক্রান্ত

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের কাছে আবারও রকেট হামলা হয়েছে। রোববার ভোরের দিকে বাগদাদের গ্রিন জোনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের কাছে একাধিক রকেট আঘাত হানলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা মার্কিন সামরিক ও পশ্চিমা কূটনীতিক সূত্র বলছে, হামলার পর কূটনৈতিক স্থাপনার আশপাশে সাইরেন বেজে উঠলেও ঠিক কোথায় আঘাত হয়েছে এবং কয়টি রকেট আছড়ে পড়েছে, সেটি পরিষ্কার নয়। তবে বাগদাদে নিয়োজিত কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী গ্রিন জোন এলাকায় বেশ কয়েকটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ওই হামলার পর ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টিত গ্রিন জোন এলাকার আকাশে বিমান উড়তে দেখা যায়। গত অক্টোবরের পর থেকে সর্বশেষ এই হামলা নিয়ে ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনী ও তাদের দূতাবাস এখন পর্যন্ত ১৯ বার আক্রান্ত হয়েছে। এসব হামলার দায় কোনো গোষ্ঠী স্বীকার না করলেও যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ইরান সমর্থিত ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর মদদপুষ্ট সামরিক নেটওয়ার্ক হাশেদ আল-শাবির দিকে আঙুল তুলে আসছে। গত ডিসেম্বরে ইরাকের উত্তরাঞ্চলের 'কে-ওয়ান' মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে রকেট হামলা হয়। ওই হামলায় ইরাকের সামরিক বাহিনীর এক কন্ট্রাক্টরের প্রাণহানির পর দেশটিতে নাটকীয় উত্তেজনা তৈরি হয়। জবাবে ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলে হাশেদ আল-শাবির একটি অংশে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েকদিন পর গত ৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বাগদাদে ইরানের বিপস্নবী গার্ডের কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হাশেদ আল-শাবির উপপ্রধান মাহদি আল-মুহান্দিসকে চোরাগোপ্তা কায়দায় হত্যা করে। ওই হত্যাকান্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইরাককে দু'পক্ষের যুদ্ধক্ষেত্র বানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে ইরাকিরা। হাশেদ আল-শাবির ওই হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। একই সঙ্গে ইরাক থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনীকে শিগগিরই প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। ইরান-সমর্থিত হাশেদের মিত্রগোষ্ঠীর নেতা হরকত আল-নুজাবা ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের বিদায় নেওয়ার ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে বলে হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর রোববারের এই হামলা হলো। মার্কিন সামরিক যানের একটি ছবি টুইট করে তিনি লিখেছেন, 'আপনারা যা ভাবছেন, তার চেয়েও বেশি কাছে আমরা।' এর আগে গত জানুয়ারিতে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভে লাখো মানুষের জমায়েতে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল ইরাকের রাজধানী বাগদাদ। দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সাদরের ডাকা 'মিলিয়ন-ম্যান মার্চ' নামে ওই বিক্ষোভে সে সময় কেঁপে ওঠে গোটা বাগদাদ। তখন গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, মার্কিন সেনা উপস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন তারা। বিক্ষোভে স্স্নোগান ওঠে- 'যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক', 'ইরাক থেকে বের হয়ে যাও মার্কিন সেনারা'। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওই শান্তিপূর্ণ মহাবিক্ষোভকে ১৯২০ সালে অনুষ্ঠিত ইরাকের ইসলামী বিপস্নব বা গণঅভু্যত্থানের সঙ্গে তুলনা করেছে।