আসামের হাইকোর্ট

নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ভোটার আইডি কার্ড নয়

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভোটার আইডি কার্ড, জমির রাজস্বের রসিদ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর (প্যান) কার্ডের কোনোটিই ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। কয়েক দশক ধরে ভারতে বসবাস করে এলেও গত আগস্টে নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) পর বিদেশি ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এক নারী আসামের গুয়াহাটি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। সোমবার তার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এসব কথা বলেছে হাইকোর্ট। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইনডিয়া আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বাস্তবায়নের সময় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে জমি এবং ব্যাংকের কাগজপত্রের নথি গ্রহণ করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের আগস্টে আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক তালিকা প্রকাশ হয়। ওই তালিকা থেকে সেখানকার প্রায় ১৯ লাখ মানুষ নাগরিকত্ব হারায়। এই ১৯ লাখ মানুষ তখন থেকেই তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করে আসছে। ভারতীয় এই রাজ্যে শত শত 'ফরেইনার্স ট্রাইবু্যনালে' নাগরিকত্ব তালিকা থেকে বাদ পড়াদের মামলার শুনানি চলছে। এই ট্রাইবু্যনালে হেরে গেলে নাগরিকত্ব হারানোরা দেশটির সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ পাবে। দেশটির সরকার বলছে, নাগরিকত্ব প্রমাণের আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে বন্দি শিবিরে পাঠানো হবে না। গুয়াহাটি হাইকোর্টের দুই বিচারপতি মনোজিৎ ভূঁইয়া ও পার্থিব জ্যোতি সাইকিয়া ২০১৬ সালের একটি মামলার রায়ের কথা উলেস্নখ করে বলেন, ওই সময় আদালত প্যান ও ব্যাংকের নথিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার হতে পারে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে জমির রাজস্ব দেয়ার রসিদ কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যবহার করা যাবে না বলেও জানায় আদালত। জাবেদা বেগম ওরফে জাবেদা খাতুন ফরেইনার্স ট্রাইবু্যনালে বিদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। তিনি ফরেইনার্স ট্রাইবু্যনালে জমা দিয়েছিলেন অন্তত ১৪টি নথি। এর মধ্যে জাবেদা বেগম, তার বাবা ও স্বামীর পরিচয় উলেস্নখ করে গ্রামপ্রধানের প্রশংসাপত্রও দিয়েছিলেন। তারপরও ফরেইনার্স ট্রাইবু্যনালের মতো হাইকোর্ট জানায়, বিদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়া জাবেদা বেগম তার বাবা-মায়ের কোনো নথি উপস্থাপন করতে পারেননি। হাইকোর্টের বিচারকরা বলেছেন, 'এই আদালত এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, প্যান কার্ড ও ব্যাংকের নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। জমির রাজস্ব দানের রসিদও কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্বের প্রমাণ হতে পারে না। সুতরাং ফরেইনার্স ট্রাইবু্যনালে যেভাবে প্রমাণপত্র সম্পর্কে রায় দেয়া হয়েছে, আমাদের মতে তা সঠিক।'