করোনার বিস্তার

চীনের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে উত্তর কোরিয়ায়

জ্জ দেশটিতে এখনো আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিদেশিদের ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে উত্তর কোরিয়া
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস চীনে মহামারি আকার ধারণ করলেও এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশ উত্তর কোরিয়ায় ওই ভাইরাসে একজনও আক্রান্ত হয়েছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দারিদ্র্যপীড়িত ওই দেশটি সম্ভবত সংক্রমণ শনাক্ত করতে পারছে না; সেখানে প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তা চীনের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলেও ধারণা তাদের। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা উত্তর কোরিয়ার সরকারি মুখপত্র 'দৈনিক সিনমুন' বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটিতে এখনো করোনায় আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। একই দিনে উত্তর কোরিয়ার এই বিবৃতিতে সমর্থন জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা জেনেভায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের কোনো আলামত নেই। চীনে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর নিজ দেশে এর বিস্তার ঠেকাতে বেইজিংয়ের সঙ্গে সব ধরনের বিমান ও ট্রেন চলাচল স্থগিত করেছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি দেশটির রাজধানীতে যাওয়া যেকোনো নাগরিক, সব বিদেশি, কূটনৈতিক কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ দাতব্য সংস্থার কর্মীদের শরীর স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ ১৪ দিন করা হলেও দেশটি তা বাড়িয়ে করেছে এক মাস। চীন সীমান্তের এই দেশটি করোনার বিস্তার ঠেকাতে সামরিক আইন জারি করেছে। কারও শরীরে করোনার উপস্থিতি না পাওয়া গেলেও চীনাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, অথবা সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করেছেন; এমন যেকোনো ব্যক্তিকে নির্জন স্থানে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কিম জং-উন। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিমের এমন নির্দেশ যারা অমান্য করবেন; বিশেষ করে অনুমোদন ছাড়া কোয়ারেন্টাইন থেকে বের হলে যে কাউকে সামরিক আইনে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে ডিক্রি জারি করা হয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই হয়ে থাকে চীনের সঙ্গে। তবে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দেশটির সঙ্গে দেড় হাজার কিলোমিটার সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। সংক্রমণ শনাক্ত করতে চীন সীমান্ত এলাকায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়েছে 'ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস'। এত কড়াকড়ি আরোপের মধ্যেও দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার লক্ষণ নিয়ে উত্তর কোরিয়ায় গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকজন মারা গেছে। তবে উত্তর কোরিয়ায় করোনায় প্রাণহানির এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি দক্ষিণের ওই সংবাদমাধ্যমটি। উত্তর কোরিয়ায় সংবাদমাধ্যম ও মানুষের বাকস্বাধীনতা ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রিত। বিশ্লেষকরা বলছেন, 'দেশটিতে যদি করোনা প্রবেশ করে, তাহলে তা দ্রম্নতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ তাদের স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা একেবারে দুর্বল। এ ধরনের ঘটনা দরিদ্রতা ও অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা একটি দেশের মানুষের জীবনকে বিপদাপন্ন করে তুলতে পারে।' দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. জন লিন্টন বলেন, 'উত্তর কোরিয়ার সাধারণ জনগণ অপুষ্টিতে ভুগছেন। তার ওপর এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তা চীনের চেয়েও বেশি প্রাণঘাতী হবে।' জাতিসংঘের তথ্য বলছে, দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৩ শতাংশ (এক কোটি ১০ লাখ) পুষ্টিহীনতার শিকার এবং ব্যাপক পরিসরে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে। এমনকি অনেক প্রদেশে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট রয়েছে।