সিএএ নিয়ে সহিংসতা

দিলিস্নর 'রক্ষাকর্তা' সেই বিচারপতিকে বদলি

তোপ রাহুল-প্রিয়াঙ্কার, রুটিন বদলি বললেন রবিশঙ্কর

প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিচারপতি এস মুরালিধর
ভারতের রাজধানী দিলিস্নতে সহিংসতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও দিলিস্ন পুলিশকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করা দিলিস্ন হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরালিধরকে রাতারাতি বদলি করা হয়েছে। বুধবার মাঝরাতে তাকে বদলি করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সংবাদসূত্র: এবিপি নিউজ দিলিস্নতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে গত চার দিন ধরে চলা দাঙ্গায় ৩৬ জন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে। সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য দিলিস্ন পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। পুলিশ আগে থেকে আরও সক্রিয় হলে পরিস্থিতি এতটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেত না, এমনটিই মত সমালোচকদের। বুধবার ভোররাতে বিচারপতি মুরালিধরের বাসভবনে বিচারপতি কেএম জোসেফ ও বিচারপতি মুরালিধরের বেঞ্চ অগ্নিগর্ভ রাজধানীতে লাফিয়ে লাফিয়ে মৃতু্যসংখ্যা বাড়তে থাকার জন্য দিলিস্ন পুলিশকে তিরস্কার করেন। মুরালিধর বলেন, 'দিলিস্ন পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না এবং তাদের মধ্যে পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে।' এ ছাড়া 'এই দেশে ১৯৮৪ সালের মতো আরেকটি হত্যাযজ্ঞ ঘটতে দিতে পারি না আমরা'-এমন মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় সরকার ও দিলিস্নর সরকারকে সহিংসতা বন্ধে একযোগে কাজ করার জন্য বলেছিলেন তিনি। বুধবার দিলিস্নর পরিস্থিতি নিয়ে মামলার শুনানির সময় দাঙ্গার কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে আসতে বাধ্য হওয়া লোকজনের জন্য উপযুক্ত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুরালিধর। এর পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব দিলিস্নতে সহিংসতা উসকে দেওয়া ও এর সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য বিজেপির চার নেতা, কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, অভয় ভার্মা ও প্রাভেশ ভার্মার বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হয়নি, দিলিস্ন পুলিশের কাছে তা জানতে চান আদালত। মামলা না করার জন্য যে 'গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে' তা বিবেচনায় নিতে দিলিস্নর পুলিশপ্রধানকে নির্দেশ দেন বিচারপতি মুরালিধর। এই বিচারপতির এমন ভূমিকা দেখার পর দিলিস্ন হাইকোর্টের আইনজীবীরা তাকে 'দিলিস্নর রক্ষাকর্তা' বলে অভিহিত করা শুরু করেন। এরপর বুধবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দিলিস্ন হাইকোর্টের তৃতীয় শীর্ষ এই বিচারপতির বদলির আদেশ ইসু্য করে। তোপ রাহুল-প্রিয়াঙ্কার, রুটিন বদলি বললেন রবিশঙ্কর এদিকে দিলিস্ন হাইকোর্টের বিচারপতি মুরালিধরের বদলি নিয়ে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক চাপান-উতর তুঙ্গে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মুরালিধরের বদলির সিদ্ধান্ত পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নেন। এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, 'বিচারপতি লোয়ার কথা মনে পড়ছে, যাকে বদলি করা হয়নি।' উলেস্নখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ব্রিজগোপাল হরকিষেণ লোয়া গুজরাটের সোহরাবুদ্দিন শেখের হত্যা সংক্রান্ত তদন্তের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। ওই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন অমিত শাহ। অন্যদিকে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক টুইটবার্তায় বলেন, 'মধ্যরাতে বিচারপতি মুরালিধরের এই বদলির নির্দেশ বর্তমান পরিস্থিতিতে মোটেই আশ্চর্যের বিষয় নয়। কিন্তু নিশ্চিতভাবে বেদনাদায়ক ও লজ্জাকর।' কিন্তু বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, মুরালিধরের বদলি কার্যত রুটিন বদলি।