স্পেনের সেনারা বৃদ্ধাশ্রমে পেল মৃত ও পরিত্যক্তদের

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নভেল করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তারত স্পেনের সেনারা অবসরপ্রাপ্তদের কেয়ার হোমগুলোর (বৃদ্ধাশ্রম) বেশ কয়েকজন বাসিন্দাকে তাদের বিছানায় মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে ও বেশ কয়েকজন বয়োবৃদ্ধ রোগীকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পেয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এমনটি জানানোর পর ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি আইনজীবীরা। সংবাদসূত্র : বিবিসি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ইতালির পর ইউরোপের সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ স্পেন কেয়ার হোমগুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য সামরিক বাহিনী নিয়োগ করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিতা রবলেস টেলিভিশন চ্যানেল 'তেলেসিঙ্কো'কে বলেছেন, 'অবসরকালীন হোমে বয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে যে রকম নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে, তা নিয়ে কঠোর ও অনমনীয় হবে সরকার। নির্দিষ্ট কিছু বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শনে গিয়ে সেনাবাহিনী কিছু বয়স্ক ব্যক্তিকে পুরোপুরি পরিত্যক্ত অবস্থায়, এমনকি কয়েকজনকে তাদের বিছানায় মৃত অবস্থায়ও পেয়েছে।' তাই বয়স্কদের বাড়িতে বাধ্যতামূলকভাবে রাখার ব্যাপারে কঠোর এবং অনমনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালভাদর ইলা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্তদের বৃদ্ধাশ্রমগুলো 'সরকারের শীর্ষ বিবেচনায় আছে।' করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর কিছু কেয়ার হোমের কর্মী কর্মস্থল ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এসব কেয়ার হোমের মৃত বাসিন্দাদের দেহগুলো শেষকৃত্যের জন্য সংগ্রহ না করা পর্যন্ত 'কোল্ড স্টোরেজে' রাখা হয়। কিন্তু যখন মৃতু্যর কারণ করোনাভাইরাস বলে সন্দেহ করা হয়, তখন উপযুক্ত পোশাকে সজ্জিত শেষকৃত্য কর্মীরা না আসা পর্যন্ত এসব মৃতদেহ তাদের বিছানায়ই রেখে দেওয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতু্য হয়েছে রাজধানী মাদ্রিদে, সেখানে ওই ধরনের লাশগুলো সরিয়ে নিতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মাদ্রিদে সংকট ঘনীভূত হওয়ায় নগর কর্তৃপক্ষের শেষকৃত্য দপ্তর জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণ না থাকায় মঙ্গলবার থেকে তারা কোভিড-১৯ এ মারা যাওয়া রোগীদের লাশ সংগ্রহ বন্ধ রাখবে। করোনা পরিস্থিতি দেশটিতে এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, লাশ পুড়িয়ে ফেলতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। মাদ্রিদ পৌর সৎকার সার্ভিস বলছে, মঙ্গলবার থেকে তারা আর কোভিড-১৯ রোগীদের মরদেহ পোড়াবেন না। কারণ হিসেবে সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতির কথা জানিয়েছেন তারা। কোভিড-১৯ রোগের বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বশেষ যে তথ্য হালনাগাদ করেছে, সেই অনুযায়ী, স্পেনের আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৬৭৩ জন ও মৃতু্যর সংখ্যা দুই হাজার ৬৯৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে তিন হাজার ৭৯৪ জন ?সুস্থ হয়ে উঠেছেন। উলেস্নখ্য, ইতালির পর স্পেনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়বহ রূপ নিয়েছে।