নতুন সংক্রমণের শঙ্কা

এবার চীনে বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

তবে মানবিক প্রয়োজনে ভিসার আবেদন করা যাবে

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ফের থাবা বসাতে পারে- এ শঙ্কায় চীন তাদের ভূখন্ডে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যাদের ভিসা কিংবা বসবাসের অনুমতি আছে, তাদের ক্ষেত্রেও এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। সংবাদসূত্র : সিনহুয়া, রয়টার্স ডিসেম্বরের শেষ দিকে হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এরই মধ্যে চীনে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে এসেছে; গত তিন দিন মূল ভূখন্ডের কোনো বাসিন্দার দেহে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। চীনে এখন যে আক্রান্তদের পাওয়া যাচ্ছে, এদের বেশির ভাগই বিদেশফেরত কিংবা বিদেশি নাগরিক। বৃহস্পতিবার দেশটি মোট ৫৫ জন নতুন আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে, যাদের ৫৪ জনই বিদেশ থেকে এসেছেন। আগতদের মাধ্যমে ফের ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে এ শঙ্কায় দেশটি বিদেশিদের প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করল। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আজ (শনিবার) রাত ১২টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি চীনা ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে চীনের ভেতর সপ্তাহে মাত্র একটি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হবে। সেসব ফ্লাইটের যাত্রীসংখ্যাও ধারণ ক্ষমতার ৭৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, 'পুরো বিশ্বে করোনার ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে চীনে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ স্থগিত করা হয়েছে। যাদের ভিসা আছে, কিংবা বসবাসের অনুমতি আছে, তারাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে; তবে কূটনীতিক এবং সি ভিসাধারীরা (এয়ারক্রাফটের ক্রুরা) এর বাইরে থাকবে।' তবে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য, বৈজ্ঞানিক বা প্রযুক্তিগত কিংবা জরুরি মানবিক প্রয়োজনে বিদেশি নাগরিকরা চীন দূতাবাস বা কনসু্যলেটে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞার পরও বিশেষ এসব ভিসায় বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে না। চীন বিদেশি নাগরিক ও এয়ারলাইন্সের ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করলেও বেশির ভাগ এয়ারলাইন্স এরই মধ্যে দেশটিতে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। চীনের অনেক শহরেও আগে থেকেই ফ্লাইট অবতরণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত মাসে বেইজিং তাদের শহরে প্রবেশ করা প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল। চীনে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে এলেও করোনাভাইরাস এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে ইতালি ও স্পেনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। শুক্রবার পর্যন্ত চীনে মোট ৮১ হাজার ৩৪০ জনের শরীরে কোভিড-১৯ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশন; এদের মধ্যে ৫৬৫ জন হয় বিদেশফেরত নয় বিদেশি নাগরিক। যে হুবেই প্রদেশ থেকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি প্রথমে চীন ও পরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানে বৃহস্পতিবারও নতুন কোনো আক্রান্ত পাওয়া যায়নি বলে দেশটির হেলথ কমিশন জানিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগী না মিললেও হুবেইয়ের সবচেয়ে বিপর্যস্ত উহান শহরকে এখনো লকডাউন করে রাখা হয়েছে। ৮ এপ্রিল থেকে সেখানে বিধিনিষেধ শিথিল হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।