ভারতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, সঙ্গে মৃতু্যও

করোনা নিয়ে পাঞ্জাবের তিন গ্রামে আতঙ্ক

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ঘরে থাকার অনুরোধ এক পুলিশের
ভারতে এক দিনে নতুন ১১৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯৪। এদের মধ্যে ৪৭ জনই বিদেশি বা বিদেশফেরত। আক্রান্তদের মধ্যে মৃতু্য হয়েছে ২০ জনের। তবে এরই মধ্যে আক্রান্তদের ৪২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চিকিৎসা ও কোয়ারেন্টিন পর্ব পার করে তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, দ্য ওয়াল দেশটির বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ 'স্টেজ থ্রি'-তে এখনো না পৌঁছালেও, তা যেকোনো সময় ঘটতে পারে। অর্থাৎ সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে যেতে পারে। এ পর্যন্ত দেশটিতে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকেরই কোনো না কোনোভাবে বিদেশিদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। হয় তারা সম্প্রতি বিদেশ থেকে ঘুরে এসেছেন বা বিদেশ থেকে আসা কোনো মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন। কিন্তু এমন কেউ যদি আক্রান্ত হন, যিনি গত কয়েক দিনে কোনোভাবেই কোনো বিদেশি মানুষের সঙ্গে মেশেননি, তাহলে সেটাই সামাজিক সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করার; অর্থাৎ স্টেজ থ্রির প্রথম ধাপ। এই অবস্থায় সংক্রমণ রুখতে সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করা জরুরি। বিষয়টি বিবেচনা করেই ভারতে ২১ দিনের 'লকডাউন' জারি করা হয়েছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস অ্যাডহ্যানম গেব্রেইসুস জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ঠেকাতে শুধু লকডাউনই যথেষ্ট নয়, রোগীদের খুঁজে বের করা, আইসোলেশন, পরীক্ষা, চিকিৎসা করার বিষয়েও জোর দিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের একটি ও অন্যান্য রাজ্যে আরও ৩৪টি ল্যাবকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত মহারাষ্ট্র ও কেরালায় করোনায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত। এদিকে, সাধারণ মানুষের জন্য ১.৭ লাখ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। খাদ্য সুরক্ষা ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যসামগ্রী কেনার সুবিধায় এই টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। পাঞ্জাবে তিন গ্রামে আতঙ্ক এদিকে, গত ১৮ মার্চ ভারতের পাঞ্জাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৭০ বছর বয়সি এক শিখ ধর্মগুরু। মৃতু্যর আগে কমপক্ষে ১০০ মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত যে ৩৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ২৩ জন ওই ব্যক্তির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছে। এছাড়া মৃতু্যর আগে ১৫টি গ্রাম সফর করেছিলেন তিনি। এরই মধ্যে সেই গ্রামগুলোতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত ৬ মার্চ দুই সপ্তাহের জার্মানি ও ইতালি সফর শেষে দিলিস্ন ফেরেন করোনায় আক্রান্ত বৃদ্ধ। তারপর শরীর খারাপ নিয়েই ৮-১০ মার্চ যোগ দেন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। সেখানে কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিলেন। তারপর ফিরে আসেন নিজের বাড়িতে। দিন দুয়েক আশপাশের গ্রামে ঘোরেন। যান গুরুদুয়ারায়। পাঞ্জাব প্রশাসনের ধারণা অন্তত ১৫টি গ্রামে ঘুরেছিলেন এই ব্যক্তি। আর সেই ১৫টি গ্রামকে সিল করে দিয়েছে পাঞ্জাব সরকার। বিভিন্ন কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে কয়েকশ গ্রামবাসীকে। এরই মধ্যে ওই ধর্মগুরুর পরিবারের ১৪ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তিনি যেখানে যেখানে গিয়েছিলেন তা আরও নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখছে পাঞ্জাব সরকার।