করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার মার্কিন বিজ্ঞানীদের!

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'ইউনিভার্সিটি অব পিটসবুর্গের' একদল বিজ্ঞানী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের একটি কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, ইঁদুরের শরীরে এই ভ্যাকসিনটির সফল পরীক্ষা চালানোরও দাবি করে তারা বলেছেন, ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পর ইঁদুরের শরীরে 'অ্যান্টিবডি' তৈরি হয়েছে। সংবাদসূত্র : ইউএসএ টুডে, নিউইয়র্ক পোস্ট ভ্যাকসিন আবিষ্কারের এই দাবি নিয়ে 'ই-বায়োমেডিসিন' সাময়িকীতে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। 'ইউনিভার্সিটি অব পিটসবুর্গের স্কুল অব মেডিসিন'র সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আন্দ্রিয়া গ্যাম্বোত্তো বলেন, 'আমরা খুব শিগগিরই এই ভ্যাকসিন রোগীর শরীরে প্রয়োগ করতে পারব।' ভ্যাকসিন তৈরির এই গবেষণার সহযোগী 'ইউনিভার্সিটি অব পিটসবুর্গের' চর্মরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লুইস ফ্যালো বলেন, 'আমরা এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পৌঁছেছি। আমরা এটি প্রয়োগের জন্য এক মাস অথবা দুই মাস ভাবতে চাই। আমরা মাত্রই প্রক্রিয়াটি শুরু করেছি।' তবে নতুন কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হলে তা মানবদেহে প্রয়োগের জন্য মার্কিন 'ফুড অ্যান্ড ড্রাগ' প্রশাসনের অনুমোদন পেতে এক থেকে দুই বছরের বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। এর আগে, গত ১৬ মার্চ সিয়াটলের চারজন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে প্রথম একটি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। সিয়াটলের বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করলেও নতুন এবং দ্রম্নতগতিতে অপর একটি ভ্যাকসিন তৈরি করলেন ইউনিভার্সিটি অব পিটসবুর্গের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা ল্যাবে (পরীক্ষাগার) ভাইরাল প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছেন, যা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে। ইঁদুরের শরীরে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। পিটসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা নিবন্ধটি প্রথমবারের মতো দেখেছেন ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের স্কুল অব মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ডেভিড ও কনোর। তিনি বলেন, এই মুহূর্তের অনেক অনেক ভ্যাকসিন পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে, এমনটি একটি ভ্যাকসিন তৈরির এই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়া উচিত। তবে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির পথে এটি একটি পদক্ষেপ মাত্র। সামনে আরও অনেক দূর যেতে হবে। তবে এই গবেষণায় নতুন কিছু পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এই ভ্যাকসিনের নাম দিয়েছেন 'পিটকোভ্যাক', যা দিয়ে পিটসবার্গ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন বোঝানো হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের দুটি উপকারী দিকের কথা তুলে ধরেছেন তারা। ভ্যাকসিনটি পরিবহণ অথবা সংরক্ষণের জন্য হিমায়িত করতে হবে না। ঘরের ভেতরে যেকোনো তাপমাত্রার মধ্যে রাখা যাবে ভ্যাকসিনটি। যে কারণে অনেক দরিদ্র দেশে ভ্যাকসিনটি সস্তায় সরবরাহ করার আশা দেখছেন এই বিজ্ঞানীরা। এই ভ্যাকসিনের একটি ডোজের দাম কত হতে পারে, সে ব্যাপারে এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তবে একবারের এক ডোজের জন্য কমপক্ষে ১০ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ৮৪৮) গুনতে হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। নতুন এই ভ্যাকসিনের অনুমোদনের জন্য মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অনুমতি মিললে বাজারে আসতে পারে এই ভ্যাকসিন।