করোনা পরিস্থিতি

বেসামাল ভারত, সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক মোদির

আগামী ৮ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বৈঠক হবে দেশটিতে ৯৯ জনের মৃতু্য আক্রান্ত সাড়ে ৩ হাজার

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
যাযাদি ডেস্ক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে বেসামাল হয়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। হুহু করে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আতঙ্কে দেশটির নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সবাই। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আগামী ৮ এপ্রিল সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা আলোচনার মাধ্যমে কাজ চালালেও খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদি এখনো বিরোধী দলের কোনো নেতার সঙ্গে বৈঠক করেননি। আর এটা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। এ কারণেই আগামী ৮ এপ্রিল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তিনি। করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের কী করা উচিত, তা নিয়ে বিস্তর মতপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, পি চিদাম্বরমসহ অনেকে। কেউ আবার প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি লিখেও পরামর্শ দিয়েছেন। তবে মোদি কারোর সঙ্গেই এ নিয়ে সরাসরি আলোচনায় বসেননি। নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে এবার বিরোধীদের সঙ্গে করোনা নিয়ে তিনি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন। শনিবার দেশটির পার্লামেন্ট বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি বলেন, আগামী ৮ এপ্রিল (বুধবার) বেলা ১১টায় করোনা মোকাবিলায় সর্বদলীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লকডাউনের নিয়ম মেনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যে দলগুলোর পাঁচজনের বেশি এমপি রয়েছেন পার্লামেন্টের দুই কক্ষে, সেই সব দলের সংসদীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে মোদির মতামতে বিরোধী দলের নেতারা সম্মতি জানালেও, এই কয়েকদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে সুর চড়তে শুরু করেছে। দুই দিন আগে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর দলটির অন্তর্র্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছিলেন, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে অসংখ্য শ্রমিককে। সোনিয়ার এ বক্তব্যের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, কংগ্রেস সংকীর্ণ রাজনীতি করছে। এদিকে, রাহুল গান্ধীর দাবি, ভারতের তুলনায় পাকিস্তানে বেশি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেদিক থেকে ভারত অনেক পিছিয়ে। হাততালি দিয়ে, প্রদীপ জ্বালিয়ে করোনা মোকাবিলার সমাধান মিলবে না। দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশবাসীর মধ্যে আতঙ্ক যাতে ক্ষোভে পরিবর্তন না হয়, তাই হয়তো রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতেই এই বৈঠক ডেকেছেন মোদি। যাতে সবার পরামর্শ নিয়ে একটা উপায় বের করা যায়। লকডাউন ওঠার পর কী করা যাবে, তা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের থেকে পরামর্শ চাইতে পারেন মোদি। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, করোনাভাইরাসে ভারতে নতুন করে ৫২৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন, আর মৃতু্য হয়েছে ১৩ জনের। রোববার পর্যন্ত দেশটিতে মোট মৃতু্য হয়েছে ৯৯ জনের। আক্রান্ত সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত মৃতু্য হয়েছে ৭৭ জনের। অন্যদিকে, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ম্যালেরিয়ার হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন ট্রাম্প। শনিবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।