লগডাউন শিথিলে তোড়জোড়

করোনা টাস্কফোর্স ভেঙে দিচ্ছেন ট্রাম্প

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে অর্থনীতি সচলে বাড়তে পারে প্রাণহানি, অবশেষে স্বীকার ট্রাম্পের

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ০৭ মে ২০২০, ১০:১৮

যাযাদি ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলার রূপরেখা ঠিক করতে গঠিত হোয়াইট হাউসের বিশেষ টাস্কফোর্সের কার্যক্রম ভেঙে দিচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার অ্যারিজোনায় একটি মাস্ক উৎপাদন কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি নিজেই গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। অর্থনীতি সচলে লকডাউন শিথিলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ এ প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে, ট্রাম্প এ আশঙ্কার কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। সংবাদসূত্র :বিবিসি, এএফপি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্স ভেঙে দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও। তিনি বলেন, 'বিভিন্ন মেডিকেল ইনস্টিটিউট, রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করা এ টাস্কফোর্সের নেতৃত্বেও ছিলাম আমি। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই টাস্কফোর্স ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।' অ্যারিজোনার কারখানা পরিদর্শনে যাওয়া ট্রাম্পকে সাংবাদিকরা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তার প্রশাসনের 'মিশন সম্পন্ন' কিনা এমন প্রশ্ন করলে রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট বলেন, 'না, সম্পন্ন হয়নি। মিশন সম্পন্ন হবে, যখন এটা (ভাইরাস) শেষ হবে।' সমালোচকরা বলছেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার তাগিদে ট্রাম্প মার্কিন নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে উপেক্ষা করেই অর্থনীতি ফের সচলের পথে হাঁটছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, 'মাইক পেন্স ও টাস্কফোর্স অসাধারণ কাজ করেছে। কিন্তু আমরা এখন খানিকটা ভিন্নভাবে ব্যাপারটা দেখছি। সম্ভবত এর জন্য নতুন কোনো কাঠামো গঠন করব।' যুক্তরাষ্ট্রে এখন গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হচ্ছে; প্রতি ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্যর মিছিলে যোগ হচ্ছে গড়ে দুই হাজারের বেশি মানুষ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবসা বাণিজ্য খুলে দেওয়া হলে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেই তারা আশঙ্কা করছেন। দেশটিতে এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়েছে; মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৭২ হাজার। ট্রাম্প বলেন, 'লকডাউন শিথিলের কারণে কিছু মানুষ কী বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে? হ্যাঁ হবে। কিন্তু আমাদের দেশকে ফের খুলে দিতে হবে, এবং তা শিগগিরই করতে হবে।' নতুন করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর নিউইয়র্ক, নিউ অরলেন্স ও ডেট্রয়েটে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও লস এঞ্জেলস, ওয়াশিংটন ডিসি ও শিকাগোতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। টেক্সাস, আইওয়া, মিনেসোটা, টেনেসি, কানসাস, নেব্রাস্কা ও ইন্ডিয়ানার মতো যেসব অঙ্গরাজ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের উপর বিধিনিষেধ শিথিল হয়েছে সেখানেও আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। জুনের শুরুতে কোভিড-১৯ এ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হতে পারে বলে দেশটির ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) এক প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউস এ প্রতিবেদনকে 'ত্রম্নটিপূর্ণ' অ্যাখ্যা দিলেও রোববার ট্রাম্প তার পূর্বাভাসে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। দুই সপ্তাহ আগেও তার মূল্যায়নে এ সংখ্যা ৬০ হাজারের নিচে ছিল।