বাণিজ্যিক পরিবেশ সৃষ্টি

উত্তেজনা সত্ত্বেও চুক্তিতে রাজি চীন-যুক্তরাষ্ট্র

করোনা নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ ভাঁওতা?

প্রকাশ | ০৯ মে ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ০৯ মে ২০২০, ১০:২৫

যাযাদি ডেস্ক

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল গত জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত বাণিজ্যিক চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে 'অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির' ব্যাপারে শুক্রবার সম্মত হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাস ছড়ানো প্রশ্নে সাম্প্রতিক বিরোধ সত্ত্বেও তারা এ ব্যাপারে সম্মত হলো। বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। সংবাদসূত্র : এএফপি, রয়টার্স চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ হি শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটিজার ও অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। লিউ হি বেইজিংয়ের বাণিজ্য আলোচনারও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, উভয়পক্ষ জানিয়েছে, তারা সামষ্টিক অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্য সহযোগিতা জোরদার করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ ও শর্ত তৈরির জোর প্রচেষ্টা চালাবে, যাতে দ্রম্নত ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। এই দুই দেশ যোগাযোগ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয় বজায় রাখার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রশ্নে সম্প্রতি উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ বাক্যবিনিময় সত্ত্বেও দেশ দুইটি এ ব্যাপারে সম্মত হলো। চীনের মধ্যাঞ্চলীয় উহান নগরীর কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত একটি ল্যাব থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়েছে, এমন প্রমাণ থাকার দাবি করে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। গত বছরের শেষের দিকে এ নগরীতে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্য যুদ্ধ পরিহার করে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় বেইজিং দুই বছরে আরও ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্য আমদানি করতে সম্মত হয়। চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ ভাঁওতা? এদিকে, চীন ভুল করে কোভিড-১৯ সংকট সৃষ্টি করেছিল এবং এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ ধ্বংস করেছে, ট্রাম্পের এই দাবির বিরুদ্ধে সংশয় বেড়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) এবং খোদ যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার পর এবার জার্মান গোয়েন্দা সংস্থাও এমন তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছে। ফলে ট্রাম্পের অভিযোগকে অনেকে ভাঁওতা বলছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা সংকটের জন্য বারবার চীনকেই সরাসরি দায়ী করে চলেছেন। তবে প্রতিবার ভিন্ন অভিযোগ তুলছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, চীন 'ভুল করে' করোনা সংকট সৃষ্টি করে সেই সংক্রান্ত তথ্য গোপন রেখেছে। এরপর চীনের বিরুদ্ধে তার বিস্ফোরক অভিযোগ ছিল, উহান শহরের গবেষণাগারে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সেই সুরে সুর মিলিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচটি ইংরেজিভাষী দেশের কথিত 'ফাইভ আইস ইনটেলিজেন্স' গোয়েন্দা সহযোগিতা কাঠামোর ১৫ পৃষ্ঠার এক দলিল উদ্ধৃত করে এমন দাবি করে অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রেরও। তাদের দাবি, করোনা মহামারির বিষয়ে চীন মিথ্যা কথা বলেছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছে। কিন্তু এমন দাবিকে ঘিরে প্রবল বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের মতে, সবার জন্য উন্মুক্ত 'ওপেন সোর্স' নথিপত্রকেই গোয়েন্দা তথ্য হিসেবে তুলে ধরায় এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।