করোনা মহামারি

দ্বিতীয় দফা সংক্রমণে বিপদ বাড়ছে কোরিয়ায়

জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান প্রেসিডেন্ট মুনের

প্রকাশ | ১১ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সিউলের একটি মার্কেটে কয়েকজন ক্রেতা
করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম দফা সংক্রমণ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সম্প্রতি নতুন করে করোনায় শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় দেশটিতে বিপদ বাড়ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাজধানী সিউলে সব বার (পানশালা) ও নৈশক্লাব বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন। সংবাদসূত্র : এএফপি, বিবিসি ক্ষমতা গ্রহণের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট মুন বলেন, 'নতুন সংক্রমণের কারণে আমাদের পরিস্থিতি যেকোনো সময় আগের মতো হয়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।' তিনি বলেন, 'শেষ পর্যন্তই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মহামারি প্রতিরোধে আমাদের সতর্কতার মাত্রা কখনই কমানো যাবে না।' দক্ষিণ কোরিয়ায় গত সপ্তাহেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক অঙ্কের ঘরে। কিন্তু হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সংক্রমণের হার, যার উৎস সিউলের নৈশক্লাবগুলো। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৪ জন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে, যা এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, দ্বিতীয় দফায় করোনার বিস্তারে বিপদ বাড়ছে প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা দক্ষিণ কোরিয়ায়। 'কোরিয়া সেন্টার্স ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন' (কেসিডিসি) জানিয়েছে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ২৬ জনই স্থানীয় বাসিন্দা এবং বাকি ৮ জন বহিরাগত। গত ১০ দিনের হিসাব লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য বা খুবই কম ছিল। কিন্তু নতুন করে আবারও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় আতঙ্ক বাড়তে শুরু করেছে। রাজধানী সিউলের একটি নাইটক্লাব থেকে নতুন করে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি তার দেহে করোনার পরীক্ষায় পজিটিভ আসার আগে ওই নাইটক্লাবে গিয়েছিলেন। ওই লোকের সংস্পর্শে এসেছেন এমন কমপক্ষে ১৫ জনের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, নতুন করে আক্রান্ত ২৬ জনের মধ্যে ১৪ জনই সিউলের বাসিন্দা। সিউল কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই নৈশক্লাবে গিয়েছিলেন, এমন ১৫০০ জনের একটি তালিকা রয়েছে তাদের কাছে। যারাই সেখানে গিয়েছিলেন, তাদের ১৪ দিন সেলফ আইসোলেশনে থাকা এবং করোনার পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কোরিয়ার বার্তা সংস্থা বলছে, এক মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথমবার একদিনে ৩০ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত হলো। এই সংক্রমণ ঠেকাতে দুই হাজার একশর বেশি নৈশক্লাব বন্ধ করেছে সিউল কর্তৃপক্ষ। কারণ নতুন সংক্রমণের বেশিরভাগই সিউলের 'ইটায়েওন' বিনোদন কেন্দ্রের নৈশক্লাব সংশ্লিষ্ট। এই ক্লাবগুলোতে যাওয়া দেড় হাজারের বেশি অতিথিদের খুঁজে বের করে করোনা পরীক্ষা করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী চুং সি-কিউন। ভাইরাসের নতুন সংক্রমণ ঠেকাতে ওই ক্লাবগুলোতে যাওয়া অতিথিদের স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে যেতে অনুরোধ করেছে কেসিডিসি। সম্প্রতি সামাজিক দূরত্বের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। একই সঙ্গে সব স্কুল এবং ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হয়েছে। এর মধ্যেই নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।