করোনা মহামারি

আক্রান্তে স্পেন-ইতালিকে ছাড়িয়ে গেল ব্রাজিল

দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি বিশ্বে মৃতু্য ৩ লাখ ১৪ হাজার, আক্রান্ত ৪৮ লাখেরও বেশি

প্রকাশ | ১৮ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত ইউরোপে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে মহামারির প্রকোপ। ফলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সবকিছু। খুলে দেয়া হচ্ছে স্কুল-কলেজ, সীমিত পরিসরে চালু হচ্ছে রেস্তোরাঁগুলোও। তবে সব কিছুই হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব মেনে। শনিবার জার্মানির বার্লিনে সম্প্রতি চালু হওয়া একটি রেস্তোরাঁয় ভোজনরসিকদের আপ্যায়নে ব্যস্ত এক রেস্তোরাঁকর্মী -সিনহুয়া
বিশ্বজুড়ে মহামারি সৃষ্টি করা করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় স্পেন ও ইতালিকে ছাড়িয়ে ব্রাজিল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাদুর্ভাবকবলিত দেশে পরিণত হয়েছে। শনিবার ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে এমনটি দেখা গেছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৯১৯ জন ছিল বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি। এতে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৩৩ হাজার ১৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, শনিবার ব্রাজিলে কোভিড-১৯ এ আরও ৮১৬ জনের মৃতু্য হয়েছে। আর রোববার পর্যন্ত দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, এএফপি আক্রান্তের এ সংখ্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের পরই ব্রাজিলের অবস্থান। কিন্তু আক্রান্ত শনাক্তে ওই তিনটি দেশ যে পরিমাণ পরীক্ষা করেছে, ব্রাজিলের পরীক্ষার হার তার থেকে অনেক কম বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি হয়ে ওঠা ও পরীক্ষায় অন্যান্য দেশ থেকে পিছিয়ে থাকার কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর ওপর চাপ ঘনীভূত হতে পারে, যিনি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উপেক্ষা করে প্রমাণিত নয় এমন ওষুধের ব্যাপক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন। এই নিয়ে বিরোধে তার নতুন নিয়োগকৃত স্বাস্থ্যমন্ত্রীও শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন। এর আগে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার কৌশল নিয়ে বিরোধের কারণে আগের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেও বরখাস্ত করেছিলেন তিনি। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কঠোর সামাজিক দূরত্ব বিধি, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের পদক্ষেপ নিয়ে স্কুল, দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয় ব্রাজিলের বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার। কিন্তু বোলসোনারো এর তীব্র সমালোচনা করেন। রাজ্যগুলোর এসব পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি অসহনীয় হয়ে উঠছে যুক্তি দেখিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। চলতি বছর ব্রাজিলের অর্থনীতি স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় সঙ্কোচনের মুখে পড়বে বলে সরকার আশঙ্কা করছে। এদিকে, ব্রাজিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যামিল্টন মাউরোর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। শনিবার থেকে সরকারি বাসভবনে আইসোলেশনে আছেন তিনি। গত সপ্তাহে পরীক্ষায় তার এক সহকর্মীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ৬৬ বছর বয়সী মাউরোর পরীক্ষার ফল আজ (সোমবার) পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোরও বেশ কয়েকবার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর তুলনায় করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষায় এখনো অনেক পিছিয়ে আছে ব্রাজিল। চলতি সপ্তাহের শুরু পর্যন্ত ব্রাজিল প্রায় তিন লাখ ৩৮ হাজার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করেছে ও আরও এক লাখ ৪৫ হাজার পরীক্ষা বিশ্লেষণের পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর বিপরীতে ইতালি ও স্পেন উভয়েই এরই মধ্যে সরকারিভাবে প্রায় ১৯ লাখ করোনাভাইরাস পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডোমিটার'র তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ লাখ ছাড়িয়েছে। করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। জরিপ সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে তিন লাখ ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে।