দ্রোহস্বর :কণ্ঠস্বরের একটি বিপস্নবী মঞ্চায়ন

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

বিএম মিকাইল হোসাইন
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির আমন্ত্রণে কণ্ঠস্বরের সদ্য মঞ্চায়িত একটি ব্যতিক্রমী আবৃত্তি মঞ্চায়ন দর্শকদের মাঝে বিপস্নবের চেতনা জাগিয়ে তুলেছে। 'দ্রোহস্বর' নামক এই পরিবেশনায় কণ্ঠস্বর আবৃত্তি দল বিপস্নবী কবিতার সংমিশ্রণে একটি সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা করেছে। তমাল, শুভ এবং মিজানের সুনিপুণ স্ক্রিপ্ট ও নির্দেশনায় সাজ্জাদ, প্রিয়ম, প্রমা, অর্পণা, সাদাফ, মিজান, তমাল, নেহা, সৃষ্টি, রাইসা, মিথুন, হাসনাত, এবং ঈশিমি মঞ্চে প্রাণবন্ত অভিনয় উপস্থাপন করেছেন। 'দ্রোহস্বর' শুধুমাত্র আবৃত্তি নয়, এটি ছিল বিপস্নব পরবর্তীতে একটি রুচিশীল ও প্রাণবন্ত আবহ তৈরি করার প্রয়াস। মঞ্চায়নের প্রধান আকর্ষণ ছিল সমাজের বঞ্চিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি এবং ন্যায়ের জন্য বিদ্রোহের বার্তা। কবিতাগুলোর মাঝে তুলে ধরা হয়েছে পরাধীনতার শেকলে আছড়ে পড়া আর্তনাদ, পরক্ষণেই আবার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিদ্রোহ করে মুক্ত জীবনানন্দ হওয়ার এক প্রস্ফুটিত প্রলাপ। আংশিক তুলে ধরা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে অতীতে ঘটে যাওয়া দমন-নির্যাতনের ঘটনাবলি। সেইসাথে জুলাই বিপস্নবের স্মৃতিচারণায় শ্রদ্ধার পাশাপাশি কাজী নজরুল ইসলামের অমর কবিতা 'বিদ্রোহী' পরিবেশিত হয়। কবিতার সাথে একাত্মতায় পরিবেশিত হয় নৃত্য। অর্পণার সুনিপুণ নৃত্য এই আবৃত্তিকে আরও গভীর রং ফুটিয়ে তোলে। বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তির সাথে তার নৃত্য দর্শকদের মাঝে অন্য রকম এক অনুভূতির সৃষ্টি করে। এটি প্রমাণ করে, শিল্পের প্রতিটি মাধ্যম একে অপরকে কীভাবে শক্তিশালী করতে পারে। এই মঞ্চায়ন শুধুমাত্র বিনোদনমূলক নয়, বরং এটি তরুণ প্রজন্মকে বিপস্নব এবং মানবিকতার প্রতি আরও সচেতন হতে অনুপ্রাণিত করেছে। 'দ্রোহস্বর' একটি সাহসী প্রচেষ্টা, যা আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতার চেতনা জাগ্রত করে। এ ধরনের পরিবেশনা ভবিষ্যতে আরও হওয়া উচিত, যেখানে শিল্পের মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা হবে। পাবিপ্রবির কণ্ঠস্বর সংগঠনের এই 'দ্রোহস্বর'-এর মতো আয়োজন প্রমাণ করে, সাহিত্য, নাটক এবং আবৃত্তি শুধু সৌন্দর্যের চর্চাই নয়, এটি একটি পরিবর্তনের হাতিয়ারও হতে পারে।