চলবে গণপরিবহণ নাগরিক সুরক্ষা নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই বিপর্যস্ত। বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫৭ লাখ, মৃতু্য হয়েছে সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষের। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। আক্রান্ত ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, মৃতু্য হয়েছে সাড়ে ৫০০ মানুষের। এমন অবস্থায় জানা যাচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ আর না বাড়িয়ে ৩১ মে থেকে অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ওইদিন থেকে সীমিত পরিসরে বাসও চলবে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার, বৈশ্বিক মহামারি রূপ নেওয়া ছোঁয়াচে রোগ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ আটকাতে ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ দেশের অফিস-আদালত; আর তখন থেকে গণপরিবহণও বন্ধ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়া সমীচীন, ঘরবন্দি থাকার সময়ে কিছু বিধি-নিষেধ শিথিলের পর যখন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে সবচেয়ে বেশি; তখন ঈদ কাটিয়ে অফিস ও গণপরিবহণ চালু হতে যাচ্ছে। যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত খুলছে না; চলাফেরায় বিধি-নিষেধও আগের মতো থাকছে। অফিস ও গণপরিবহণ চালু হতে যাচ্ছে- এই বিষয়টিকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা মানাসহ যথাযথ উদ্যোগও অব্যাহত রাখা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। কেননা, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বিচ্ছিন্নতা বা সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্য নির্দেশনা মানা ছাড়া করোনা মোকাবিলার কোনো উপায় নেই। ফলে যখন মানুষ বাইরে বের হবে তখন পরিস্থিতি যেন আশঙ্কাজনক হয়ে না ওঠে সেদিকে দৃষ্টি রেখে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। জানা গেছে, আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রকাশিত খবরে এমনটি উঠে এসেছে, ছুটি বাড়বে না। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত আকারে চালু রাখা হবে। পাশাপাশি নাগরিক জীবনের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত আকারে চলবে। বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা যাবে না। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে নাগরিক জীবনের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার যে বিষয়টি আলোচনায় আসছে, সেটি যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। বলা দরকার, ৩০ মের পর আর ছুটি না বাড়ায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির মেয়াদ আপাতত শেষ হচ্ছে। ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে সবাইকে ঘরে রাখতে গণপরিবহণ বন্ধ করে ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় সাধারণ ছুটি; অনেকটা অন্য দেশগুলোর জারি করা 'লকডাউন'-এর মতো। লক্ষণীয় যে, পরিস্থিতির উন্নতি দেখে বিভিন্ন দেশ লকডাউন শিথিল করে জনজীবন স্বাভাবিকতা ফেরানোর পথে হাঁটছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, সতর্কতায় এই ঢিল রোগ পুনরায় ব্যাপক আকারে ছড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ফলে সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টিও আমলে রেখে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে, বাংলাদেশে এপ্রিলে পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার পর মে মাসে ঈদের আগে আরও কিছু বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়; তারপর কোভিড-১৯ সংক্রমণ হার সবচেয়ে বাড়তে দেখা যাচ্ছে বলেও জানা গেছে। এই অবস্থায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে আরও কিছু দিন কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করলেও অর্থনীতিবিদদের অনেকে আবার স্থবির অর্থনীতি চালু করতে সীমিত আকারে সবকিছু খোলার পক্ষে মত জানিয়ে আসছিলেন। ঈদের আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোর ইঙ্গিতই ছিল। আমরা মনে করি, জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বিধি-নিষেধে শিথিলতা এলেও সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নাগরিক সুরক্ষার বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ জারি রাখার বিকল্প নেই। তা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। সঙ্গত কারণেই নাগরিক সুরক্ষার বিষয়সহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।