করোনাযোদ্ধা মানবসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সারা বিশ্ব করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত। দিন যতই যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ নিয়ে সারা বিশ্ব টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। যে দেশ যতই আশার বাণী শোনাক, এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবুও ডাক্তারসহ স্বাস্থ্যসেবকরা দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অবশ্যই এ যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্য বিভাগের সেবকরা। উন্নত দেশগুলোতেও দেখতে পাচ্ছি অনেক ডাক্তার-নার্স সেবা দিতে গিয়ে মৃতু্যবরণ করেছেন। আমাদের দেশেও শত শত ডাক্তার, নার্সসহ সেবাদানকারী কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ইতিমধ্যে চারজন প্রতিভাবান ডাক্তার মারা গেছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন- ডাক্তার, নার্সরা সঠিকভাবে রোগীর সেবা দিচ্ছেন না। অভিযোগ থাকবে, সমস্যাও থাকবে। তারপরও কিন্তু ডাক্তাররাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। একজন নার্সকে মায়ের ভূমিকা, বোনের ভূমিকা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়। রোগীর সব ধরনের পরিচর্যা তাদের ওপর ন্যস্ত থাকে। চিকিৎসাব্যবস্থার দিক দিয়ে আমাদের দেশ বেশকিছু ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো থেকে হয়তো পিছিয়ে আছে। জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স নেই। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসাকেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্নতমানের হাসপাতাল স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। আমাদের সীমিত সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবায় এনেছেন বৈপস্নবিক পরিবর্তন। চিকিৎসকরা দেবতা নয়, আমাদের মতোই মানুষ। আমাদের কারও ভাই, কারও বোন। তাদেরও ভুলত্রম্নটি থাকতে পারে। তাই বলে ঢালাওভাবে তাদের দোষী করা যাবে না। তাদের কোনো ছুটি নেই। এবারের ঈদেও তারা হাসপাতালেই ছিলেন। হাসপাতালে থাকতে হয়েছে অসুস্থ ব্যক্তি ও করোনা রোগীদের সেবা করার জন্য। জনগণের অসচেতনতায় দিন দিন ডাক্তাররা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। সেজন্য জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চালু হয়েছে টেলি-মেডিসিন সেবা। সম্প্রীতি বাংলাদেশও জনবিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে চালু করেছে টেলি-মেডিসিন সেবা কার্যক্রম। করোনাভাইরাসের যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক তৈরি হয়নি, সেজন্য সচেতনতাই একমাত্র মুক্তির পথ। বাংলাদেশের খ্যাতিমান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দিন-রাত জনগণের মধ্যে সচেতনতা, করণীয় এবং প্রতিরোধের উপায়বিষয়ক দিকনির্দেশনা দিয়ে মানুষের মধ্যে সাহস, শক্তি জোগাচ্ছেন। শুরুতে কিছুটা সমন্বয়হীনতার অভাব থাকলে এখন কিন্তু ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট সেবকরাই সামনে লড়াই করে যাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতারা, সাংবাদিকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত সেবা দিতে গিয়ে বেশ কজন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। সাংবাদিকরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ পর্যন্ত চারজন সাংবাদিক মারা গেছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যসেবকদের। তারাই বিপদের প্রকৃত বন্ধু। এই করোনাকালে তারাই মানবসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আসুন তাদের উৎসাহ দিই, সাহস দিই, সম্মান জানাই।