করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিন

ভয়াবহ সংক্রমণের দিকে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনায় নতুন করে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাবিচারে বিশ্বের ২১৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ টপ টেনে (শীর্ষ দশে) উঠে এসেছে। তথ্য মতে, বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির আপডেট তথ্যপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডোমিটারের গত কয়েকদিনের পরিসংখ্যান চিত্র পর্যালোচনায় এ হিসাব দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই পরিস্থিতি ভয়াবহতা আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। বলা দরকার, করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যানুসারে সাজানো বিশ্ব তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান মাত্র দেড় মাস আগেও নিচের সারিতে ছিল অথচ তা এখন দ্রম্নত ধাপে 'টপ টুয়েন্টির' দিকে এগোচ্ছে। ২৮ মে করোনায় আক্রান্ত মোট ৪০ হাজার ৩২১ রোগী নিয়ে সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ ২২তম স্থানে আসে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মার্চ প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ১ মে পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ২৩১ জন রোগী নিয়ে বিশ্ব তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪১তম, যা পরবর্তী দুই সপ্তাহে আরও ১১ ধাপ এগিয়ে গত ১৪ মে ৩০তম অবস্থানে উঠে আসে। ওই দিন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৮৬৩ জন। অথচ এরপর মাত্র ১৪ দিনে অর্থাৎ ২৮ মে পর্যন্ত নতুন করে আরও ২১ হাজার ৪৫৮ জন রোগী বেড়ে বিশ্ব তালিকায় বাংলাদেশে অবস্থান এসে দাঁড়ায় ২২তম স্থানে। উলেস্নখ্য, বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির প্রতিদিনের আপডেট তথ্যপ্রদানকারী এ প্রতিষ্ঠানটির পরিসংখ্যান চিত্রে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশের মধ্যে যে ২১টি দেশে মোট রোগীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে, ওইসব দেশের মধ্যে ১৩টি দেশে ইতিমধ্যেই নতুন সংক্রমণের হার কমেছে বলে খবরের মাধ্যমে জানা যায়। এ ছাড়া নতুন আক্রান্ত রোগীর দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ দশে- এমনটি খবরের মাধ্যমে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান তথ্যানুযায়ী, বেশ কয়েকদিন ধরেই নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে। আমরা উলেস্নখ করতে চাই, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা করছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য রেড জোন পেরিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে করোনা যেভাবে বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়েছে, তাতে খুব স্বল্প সময়েই এ অবস্থান আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলো আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। এ ছাড়া সারা দেশে চলমান অঘোষিত লকডাউন সহসাই তুলে নিয়ে শিল্প-কারখানা, অফিস-আদালত ও সব ধরনের বাণিজ্যিক কর্মকান্ড সচল করার প্রস্তুতি এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার প্রবণতা এ ঊর্ধ্বগতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে এমন উদ্বেগের বিষয়টিও সামনে এসেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, যখন স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্টরা এমন আশঙ্কাও করছেন, দেশে করোনায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন যে হারে বাড়ছে, তাতে এই বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া ডাক্তার-নার্সদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে- তখন সার্বিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়। এছাড়া স্বাভাবিক নিয়মে সংক্রমিত সবার নমুনা পরীক্ষা করা দুষ্কর হলে এ অবস্থায় এ মরণব্যাধির প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নেওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে বলেও আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ যতই দিন যাচ্ছে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৪৪ হাজার ৬০৮ জন, আর মারা গেছে ৬১০ জন। গতকাল মারা গেছে ২৮ জন। যা চরম ভয়াবহতার ইঙ্গিতবহ। সর্বোপরি বলতে চাই, সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা জরুরি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহতাকে সামনে রেখে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।