জীবনযাত্রায় স্বাভাবিকতা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে

প্রকাশ | ০২ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে কর্মচাঞ্চল্যহীন দেশ ফিরছে আগের মতো। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে সচিবালয় ফিরছে আগের রূপে। করোনাভাইরাস সংকটকালে বিধি-নিষেধ শিথিল করায় দুই মাস পর রোববার থেকে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে কাজ শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রোববার প্রথম অফিস করেছেন বেশির ভাগ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব। রোববার থেকে ব্যাংকের সব শাখায় স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মার্চ মাসের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী প্রথম ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রমাবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী টানা ৬৬ দিনের ছুটি শনিবার (৩০ মে) শেষ হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হওয়ার দীর্ঘ ৬৬ দিন পর রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে চলা শুরু করেছে গণপরিবহণ। তবে ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়ালেও মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব। গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা থাকলেও তাও মানতে দেখা যায়নি। বাসে ছিল না হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশকের মতো কোনো সুরক্ষাসামগ্রী। কিছু গণপরিবহণে শুধু শারীরিক দূরত্বে বসার মাধ্যমেই স্বাস্থ্যবিধি সীমাবদ্ধ ছিল। আর বেশির ভাগ গণপরিবহণে সেটিও মানা হয়নি। করোনাভাইরাসের মহামারির বিস্তারের মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মানার প্রচেষ্টার মধ্যদিয়ে দেশজুড়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল দুই মাস পর ফের শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তার রোধে ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর ঝুঁকি আর শঙ্কার মধ্যেই খুলতে শুরু করেছে সব। মানুষকে 'স্বাভাবিক' কর্মকান্ডে ফিরতে হচ্ছে নতুন বাস্তবতায় অভ্যস্ত হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে। এখন সবাইকে বাইরে বের হতে হবে স্বাভাবিক সময়ের মতোই, কিন্তু সর্বক্ষণ সচেতন থাকতে হবে নিজে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এবং অন্যকে বাঁচাতে। দূরত্ব রক্ষা করে চলা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধিকে করে নিতে হবে জীবনের সঙ্গী। এই সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণের পাশাপাশি সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরে অফিসে আসতে বলা হয়েছে। তবে বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা মানা। আমরা মনে করি জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল রাখার জন্য সব কিছু উন্মুক্ত রাখা উচিত। কিন্তু এমন এক সময়ে সব কিছু খুলে দেয়া হলো যখন দেশে সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে। পুরো জুন মাসে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, যা সামাল দেওয়া আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। মনে রাখতে হবে ভারতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সে দেশে আরও এক মাসের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। মানুষের জীবন আগে পরে জীবিকা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ১৫ জুন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আমরাও তাই প্রত্যাশা করছি। কিন্তু সংক্রমণ আরও ভয়াবহরূপ নিলে সরকার কী করবে সেটাই বিবেচ্য বিষয়। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে। প্রয়োজনে সংক্রামক রোধ বিধি অনুসারে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই। .