গণপরিবহণে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সরকার গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ালেও দূর হয়নি অনিয়ম। যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। বাসে আগের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দুই মাসেরও বেশি সময় রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সুপারিশে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ১ জুন থেকে আবারও চলছে বাস ও অন্যান্য যানবাহন। তবে এক আসনে যাত্রী ও এক আসন ফাঁকা রেখে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সর্বত্র। যদিও চালকদের দাবি, ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের কথা হচ্ছে, ভাড়া বেশি না নেয়া হলে যাত্রীরা কেন অভিযোগ করবে। নিতান্তই খুব বেশি প্রয়োজন না হলে গণপরিবহণ এড়িয়ে চলছে মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বা চালকরা মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন। বেশির ভাগ হেলপারের মুখে মাস্ক, হাতে গস্নাভস ও জীবাণুনাশকের বোতল দেখা গেছে। যাত্রীরা ওঠার সময় তাদের হাতে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। তবে সব বাসে এটা করা হচ্ছে না। ভাড়া নিয়ে দেখা দিয়েছে বিপত্তি। এদিকে বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়ন কবির পলস্নব। প্রজ্ঞাপনটি দেখতে চেয়েছে আদালত। তাই এখনও কোনো আদেশ হয়নি। আমরা মনে করি ৬০ শতাংশ বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। এর ফলে একদিকে যেমন যাত্রীস্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গণপরিবহণে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব?্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়া জরুরি। তা ছাড়া স্বাস্থ?্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে শৈথিল?্য প্রদর্শন করছে কেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাদের ধারণা যেন কিছুই হয়নি। এ ধরনের উদাসীনতা বা অবহেলা নিজের জন?্য শুধু নয়- পরিবার, সমাজ তথ?া অন?্যদের জন?্যও ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। মনে রাখতে হবে জনঘনত্ব, সংক্রমণের মাত্রা, রোগীর সংখ্যা, পার্শ্ববর্তী এলাকার যোগাযোগব?্যবস্থা, টেস্ট ফ্যাসিলিটি, চিকিৎসা সুবিধাসহ নানা বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। জীবন-জীবিকার প্রশ্নে সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়ে স্বাস্থ?্যবিধি মেনে সব ধরনের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে। গণপরিবহণে চলাচলের সময় স্বাস্থ?্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু মানা হচ্ছে না তা। যাত্রী তোলার সময় হেলপার গেটেই দাঁড়িয়ে থাকে, তাকে ঘেঁষে বাসে উঠতে হয়। এর ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। অনেক হেলপারের মুখে মাক্স নেই। এসব নিশ্চিত করতে হবে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যে কোনো সংকটে বা অজুহাতে দেশে গণপরিবহণের ভাড়া বাড়ালে তা স্বাভাবিক সময়েও কমানোর কোনো নজির নেই। এবার আরও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তোলা হচ্ছে যাত্রী সংকটের অজুহাত। তারা খরচ উঠাতে পারছেন না, বলা হচ্ছে এ কথাও। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া প্রত্যাশিত নয়। আমরা চাই এর যৌক্তিক সমাধান। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপই প্রত্যাশিত।