বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

ঈদে যাতায়াতে ১৬৮ জন নিহত

নতুনধারা
  ০৭ জুন ২০২০, ০০:০০

কোনোভাবেই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। গণপরিবহণ বন্ধ থাকা অবস্থায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের যাতায়াতে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ১৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ও ১৬৮ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ২৮৩ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ১৫৬টি দুর্ঘটনায় ১৮৫ জন নিহত ও ২৮৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সাধারণ ছুটি চলাকালীন দেশে গণপরিবহণ বন্ধ ছিল। ৯০ শতাংশ যাত্রীর যাতায়াত বন্ধ থাকলেও সেই তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত যানবাহনের চালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহণকে বিকশিত করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনাকেও মহামারির মতো গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর গণপরিহণ বন্ধ থাকায় ঈদযাত্রা ব্যক্তিগত পরিবহণে সীমিত থাকলেও ঈদের আগে-পরে সড়ক দুর্ঘটনা ছিল অতীতের তুলনায় বেশি। একই সময়ে নৌপথে ছয়টি ছোট-বড় বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ৪৫ জন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ২৫ মে। এদিন ২০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হন।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। কদিন আগেও রাজধানীর বাংলামোটরে দুজন মারা গেল। কিন্তু ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে কারা এর জন্য দায়ী তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মূলত অবৈধ চালক ও চালকের অসতর্কতা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও খামখেয়ালিপনা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও সড়ক-মহাসড়কের ভঙ্গুর অবস্থা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে সরকার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তেমন ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে না। দুই বাসের রেষারেষির মধ্যে চাপা পড়ে রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্য হয়। তখন ছাত্ররা আন্দোলনে নেমে পড়ে। এর মধ্যে নতুন আইনও করা হয়েছে। কিন্তু ইতিবাচক ফল চোখে পড়ছে না।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সড়ক আইন জনগণের নিরাপত্তার আইন। জনগণের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার আপস করবে না। এ আইন সবার জন্য। রাস্তায় নৈরাজ্য চলতে দেওয়া যাবে না। এটা সত্য, বাসচালক ও চালকের সহকারীদের খামখেয়ালির কারণে নিরীহ ছাত্রছাত্রীসহ যাত্রীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তাদের কবল থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। এমনকি ৬৬ দিন লকডাউনের মধ্যেও অনেকেই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। আমরা মনে করি, চালকদের আরও সতর্ক হতে হবে। একই সঙ্গে চালকরা কোনোভাবেই যাতে হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাতে না পারেন, সে ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশদের আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল হতে হবে। পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে সড়ক দুর্ঘনা কমাতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101499 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1