কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম চড়া

প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কিছুদিন স্থির থাকার পর আবার বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। লকডাউনের সময় শাকসবজির দাম একেবারেই কম ছিল। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে দাম বাড়তে শুরু করে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে শাকসবজি, মাছ ও মুরগির। সবজিভেদে কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। কেজিতে ১০-৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে মাছের বাজার। চড়া রয়েছে মুরগির বাজারও। কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে বিভিন্ন মুরগি দাম। তবে মাছ, মুরগি, সবজির দাম বাড়লেও দাম কমেছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের। আর অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংস, ডাল, ডিম, আলু, তেল, লবণ, চিনিসহ অন্য পণ্যের দাম। বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ধনিয়া পাতার দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৮০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ধনিয়াপাতা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। দাম অপরিবর্তিত আছে আলু, কলা, বড় কচু, লেবু, পুদিনা পাতা, লাউ ও জালি কুমড়ার দাম। লকডাউনের সময় করলার কেজি ছিল ৪০ টাকা এখন ৮০ টাকা। অন্যান্য সবজির দামও এখন প্রায় দ্বিগুণ। এ অবস্থা সংসদে বাজেট পেশের আগে থেকেই। আশার কথা বাজেট উত্থাপনের পর এসব পণ্যের দামের ক্ষেত্রে তেমন একটা হেরফের হয়নি। তবে চাল পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দেশের দুঃসময়ে করোনার মধ্যেও পাইকারি, আমদানিকারক, আড়তদার ও মিল মালিকদের কব্জায় রয়েছে বাজার। তারাই সুযোগ মতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় এবং জনগণকে জিম্মি করে। যা একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যাশিত হতে পারে না। দেশের দোকানগুলোতে নেই মূল্য তালিকা। তারা মানছে না আইন। ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। ফলে বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। ভাবতে বিস্ময় লাগে যে এ দেশের অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা মানবিক বিপর্যয়ের সময়ে দাম বাড়িয়ে দেয়, দাম বাড়িয়ে দেয় বিভিন্ন উৎসব পার্বণে। এর দ্বারা প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তারা কতটা অমানবিক। আমরা মনে করি, দেশের অসৎ ও অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা করোনাভাইরাসকালেও জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। অতি লোভী মানসিকতার কারণেই দেশের সাধারণ জনগণ তাদের কাছে জিম্মি। অবাক ব্যাপার যে, বাজারে নিত্যপণ্যের কোনো ধরনের সরবরাহ সংকট নেই, তারপরেও হু হু করে দাম বাড়ছে। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই হতাশাজনক চিত্র। সরকারের উচিত এই দুর্যোগকালে নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। সামনে সময় আরো কঠিন হতে পারে এই কথা মাথায় রেখে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের সুপরিকল্পিত উদ্যোগ ও কঠোর অবস্থানই কেবল পারে দেশের মানুষকে এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দিতে এর কোনো বিকল্প নেই।