ঢাকার ৪৫ এলাকা রেড জোন যথাযথ বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের ভয়ংকর সংক্রমণে থমকে গেছে বিশ্ব। বাংলাদেশও এই পরিস্থিতির বাইরে নয়। প্রসঙ্গত বলা দরকার, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হলেও তা শিথিল করা হচ্ছে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে। করোনা রোধের উপায় খুঁজতে যেমন নানা ধরনের প্রচেষ্টা চলছে, তেমনি এর প্রভাব সংক্রান্ত নানা বিষয়ে গবেষণাও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে জোনভিত্তিক লকডাউনের বিষয়টি সামনে আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, জেলার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন এবং পুলিশ সুপার মিলে এসব জোনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে লাল এলাকা চিহ্নিত করবেন। আর ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির যে ৪৫টি এলাকাকে 'রেড জোন' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ১৭ এবং দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকা আছে। বলা দরকার, এর আগে জানা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রমণ এলাকাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'জোনভিত্তিক' লকডাউনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। মূলত করোনা সংক্রমণ মাত্রা বাড়ার মধ্যে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোন করে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য যে, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ক্রমাগত বাড়ছে যেমন সংক্রমণের সংখ্যা, তেমনি বেড়ে চলেছে নিহতের সংখ্যাও। আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জোনভিত্তিক লাকডাউনের বিষয়টি আমলে নিয়ে এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। উলেস্নখ্য, বিশ্বে যেমন ক্রমাগত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি দেশেও হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষ হয় ৩০ মে। ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চলাচল ও গণপরিবহণ চালুর নির্দেশনা দেয় সরকার। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দেশের অর্থনীতি সচল রেখে এবার জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত সামনে আসে। এখন ১৬ জুন থেকে নতুন নির্দেশনা মানতে হবে। জানা গেছে, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সারাদেশ যে অবস্থায় ছিল, ঠিক একই অবস্থা চলমান থাকবে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভিত্তিতে জোনিং করা হচ্ছে এবং অধিক সংক্রমিত এলাকাকে 'রেড জোন' ঘোষণা করে এসব স্থানে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়টি সামনে আসছে। জানা গেছে, রেড জোনে সাধারণ ছুটি থাকবে। যাতে মানুষ বাইরে না যায়, ভেতরে না আসে। স্পেসিফিক এরিয়া লকডাউন করা হবে এবং ১৪-২১ দিন লকডাউন থাকবে। সেখানে খাবার পৌঁছানো, অন্য রোগী থাকলে তার সেবাপ্রাপ্তির জন্য কমিটি এবং হেল্প লাইন থাকবে। আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্তের যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। একই সঙ্গে দেশের সব মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এ সময়ে সচেতনতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। সামাজিক দূরত্ব, পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সচেতনতা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন অপরিহার্য। কেননা এই কঠিন সময়ে যথার্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হতে পারে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। ফলে জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হোক এটাই কাম্য। এর পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকের সচেতনতা ছাড়া এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না। সঙ্গত কারণেই সামাজিক দূরত্ব, বিচ্ছিন্নতাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতার বিষয়টি অগ্রগণ্য। উলেস্নখ্য, এর আগে নানাভাবে অসচেতনতার বিষয় সামনে এসেছে। কাঁধে হাত রেখে গল্প করা, কেউ কেউ মুখে মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখাসহ নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দূরত্ব মানছেন না অনেকেই এমনটিও আলোচনায় আসে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।