করোনা সংক্রমণের শততম দিন

রোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে দ্রম্নত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাস আর একস্থানে সীমাবদ্ধ নেই। যখন দেশে দ্রম্নত করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তখন বিষয়টা কতটা ভয়ানক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে সেটি আমলে নিতে হবে। একদিকে দেশে জনসংখ্যা বেশি, অন্যদিকে প্রস্তুতি কতটা এবং মানুষের সচেতনতার চিত্র আমলে নিয়ে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। উলেস্নখ্য, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শততম দিন ছিল গত সোমবার। এই দিনে দেশে সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না, হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। আমরা বলতে চাই, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোই যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও নাজুক প্রস্তুতি নিয়ে দেশের চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা কীভাবে এ মরণব্যাধি মোকাবিলা করবেন! ফলে যখন সংক্রমণ বাড়ছে তখন কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। উলেস্নখ্য, করোনা সংক্রমণে পুরো বিশ্বই কার্যত থমকে গেছে। সারা বিশ্বে সংক্রমণ বাড়লেও ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ কমে আসছে। এ অবস্থায় দেশে যখন বেড়েই চলেছে সংক্রমণ তখন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। উলেস্নখ্য, সারা বিশ্বে যখন সংক্রমণ বাড়ছে তখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হলেও তা শিথিল করা হচ্ছে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে। করোনা রোধের উপায় খুঁজতে যেমন নানাধরনের প্রচেষ্টা চলছে, তেমনি এর প্রভাব সংক্রান্ত নানা বিষয়ে গবেষণাও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে জোনভিত্তিক লকডাউনের বিষয়টি সামনে আসছে। আর যেহেতু ক্রমাগত সংক্রমণ বাড়ছে- আমরা মনে করি, যত দ্রম্নত সম্ভব জোনভিত্তিক লকডাউনের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। জানা গেছে, রেড জোনে সাধারণ ছুটি থাকবে। যাতে মানুষ বাইরে না যায়, ভেতরে না আসে। বলা দরকার, ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষ হয় ৩০ মে। ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চলাচল ও গণপরিবহণ চালুর নির্দেশনা দেয় সরকার। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দেশের অর্থনীতি সচল রেখে এবার জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত সামনে আসে। এখন ১৬ জুন থেকে নতুন নির্দেশনা মানতে হবে। জানা গেছে, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সারাদেশ যে অবস্থায় ছিল, ঠিক একই অবস্থা চলমান থাকবে। আর স্পেসিফিক এরিয়া লকডাউন করা হবে এবং ১৪-২১ দিন লকডাউন থাকবে। সেখানে খাবার পৌঁছানো, অন্য রোগী থাকলে তার সেবা প্রাপ্তির জন্য কমিটি এবং হেল্প লাইন থাকবে। আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্তের যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। একই সঙ্গে দেশের সব মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, এ সময়ে সচেতনতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। সামাজিক দূরত্ব, পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এর আগে নানাভাবে অসচেতনতার বিষয় সামনে এসেছে। কাঁধে হাত রেখে গল্প করা, কেউ কেউ মুখে মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখাসহ নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দূরত্ব মানছেন না অনেকেই এমনটিও আলোচনায় আসে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সচেতনতা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন অপরিহার্য। তা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। এটা মনে রাখা দরকার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ কমতে থাকলেও দেশে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, একই সঙ্গে বাড়ছে লাশের সংখ্যা। ফলে জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্তের যেমন যথার্থ বাস্তবায়ন জরুরি তেমনি এটাও মনে রাখা দরকার প্রত্যেকের সচেতনতা ছাড়া এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না। সঙ্গত কারণেই সামাজিক দূরত্ব, বিচ্ছিন্নতাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতার বিষয়টি অগ্রগণ্য।