শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ

সরকারের এ উদ্যোগ ইতিবাচক
নতুনধারা
  ১৭ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনাকালে সরকার কৃষির ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। এবার বাজেটেও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কারণ করোনা উচ্চ আকারে বিস্তার লাভ করায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এর প্রভাব বাংলাদেশে কিছুটা হলেও পড়বে। কারণ ইতিমধ্যে দেশে দেড় কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ। এই চিত্র অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই অবস্থায় কৃষিই আমাদের প্রধান ভরসা। বাংলাদেশ যেহেতু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ সেহেতু আমরা আশাবাদী হতে পারি। তা ছাড়া এবার দেশে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশ খাদ্য সংকটে পড়বে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আশার কথা, চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে মজুতের জন্য একজন কৃষকের কাছ থেকে বোরো ধান কেনার সীমা দ্বিগুণ করে সর্বোচ্চ ছয় মেট্রিক টন নির্ধারণ করেছে সরকার। অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা সংশোধন করে রোববার খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে পাঠানো এক চিঠিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একজন কৃষকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ তিন মেট্রিক টন ধান কেনার সুযোগ ছিল। চিঠিতে বলা হয়েছে, অধিকসংখ্যক কৃষককে সুযোগ দিতে উপজেলা কমিটি একজন কৃষকের কাছ থেকে সর্বনিম্ন তিন বস্তা পরিমাণ অর্থাৎ ১২০ কেজি ধান ও ১৫০ কেজি গম এবং সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিক টন পর্যন্ত ধান/গম সংগ্রহ পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারবে। নির্ধারিত পরিমাণ ধান/গম একজন কৃষক কিস্তিতে বিক্রি করতে পারবেন। তবে কোনো কিস্তি তিন বস্তার কম হবে না।

এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, চলতি রোবো মৌসুমে সরকারিভাবে আট লাখ মেট্রিক টন ধান এবং ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং দেড় লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে বোরো ধান এবং ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। বোরো ধান-চাল সংগ্রহ শেষ হবে ৩১ আগস্ট। এবার ২৬ টাকা কেজি দরে বোরো ধান, ৩৬ টাকা কেজিতে সিদ্ধ চাল এবং ৩৫ টাকা কেজি দরে বোরোর আতপ চাল কেনা হচ্ছে।

আমরা মনে করি, সরকারের এই উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। সরকার প্রতিবছর কৃষি খাতে সার, সেচ ও বিদু্যতে ভুর্তকি, নগদ সহায়তা ও প্রণোদনা হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। ব্যয়িত অর্থের সিংহভাগই খরচ হয় প্রভাবশালী ও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বড় কৃষকদের পেছনে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক সব সময় সরকারের এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন, থাকেন উপেক্ষিত- এমন অভিযোগও উঠে এসেছে। দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরাই পারিবারিক শ্রম ও নিজস্ব মেধা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকে। তাই কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে- এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সরকারি ভর্তুকি ও প্রণোদনার সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। তা হলে কৃষি ক্ষেত্রে আমরা আরো এগিয়ে যেতে পারব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<102719 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1