সৌরবিদু্যৎ ব্যবহারে সাফল্য

এই অর্জন ধরে রাখতে হবে

প্রকাশ | ১৮ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সৌরবিদু্যৎ উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। বাসাবাড়িতে সৌরবিদু্যৎ ব্যবহারে (সোলার হোম সিস্টেম) বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মানুষ বাসাবাড়িতে সৌরবিদু্যৎ ব্যবহার করায় বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে গেস্নাবাল স্ট্যাটাস রিপোর্টে (জিএসআর) বাংলাদেশ মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। আর মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ মানুষ বাসাবাড়িতে সৌরবিদু্যৎ বা সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করে নেপাল এ তালিকায় প্রথম। মঙ্গলবার ২০২০ সালের বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি গেস্নাবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট (জিএসআর) প্রকাশ করেছে আরইএনএ-২১। বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম সোলার হোম সিস্টেমের জন্য বিশেষ ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে। বাসাবাড়িতে সৌরবিদু্যৎ ব্যবহারে শীর্ষ ছয়টি দেশকে তালিকায় আনা হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বাংলাদেশে সেচের কাজেও সৌরবিদু্যৎ ব্যবহার হচ্ছে। দেশটির ১ হাজার ৫০০ সেচপাম্প সৌরবিদু্যতের মাধ্যমে চালু রয়েছে। করোনাকালে এই সংবাদ আমাদের আশাবাদী করে তোলে। আমরা মনে করি, আমাদের সৌরবিদু্যৎ উৎপাদন ও ব্যবহারের দিকে অগ্রসর হতে হবে। কারণ এখানে খরচ কম। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌরবিদু্যৎ কেন্দ্র নির্মাণে ৪০-এর ওপর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা বিদু্যৎকেন্দ্র স্থাপন করতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌরবিদু্যৎ কেন্দ্র নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাবনায় সরকারি কোম্পানি নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, ফেনীতে বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড বড় ধরনের সৌরবিদু্যৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ করছে। এভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আগামী দুই বছরের মধ্যে তিন হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদু্যৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এটা সম্ভব হলে দেশে সৌরবিদু্যতের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে। তবে বাংলাদেশে সৌরবিদু্যৎ কেন্দ্র করার কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো জমির স্বল্পতা। সে কারণে সৌরবিদু্যতের সঙ্গে কৃষি ও খামার কীভাবে করা যায় তা ভাবা হচ্ছে। এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে। বিশেষ করে খারাপ মানের সৌরবিদু্যৎ প্যানেল ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার বাংলাদেশে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসার না হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়। উলেস্নখ্য, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর পৃথিবীতে বিদু্যৎ ব্যবহারকারী গড়ে বেড়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। আর বাংলাদেশ এ হার বৃদ্ধিতে পৃথিবীতে অন্যতম। ২০১০ সালে বাংলাদেশে ৪৭ শতাংশ মানুষ বিদু্যতের আওতায় ছিল- যা ২০১৯ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৯৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে। আশার কথা হচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপাদিত বিদু্যতের চেয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদু্যতে খরচ কম। সৌরবিদু্যৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রতি ইউনিট বিদু্যৎ উৎপাদনে খরচ গড়ে ৬ দশমিক ৮ সেন্ট। (প্রতি সেন্ট ৮৫ পয়সা ধরলে বাংলাদেশি টাকায় ৫ টাকা ৭৮ পয়সা হয়)। প্রতিবছরে এ উৎপাদন ব্যয় গড়ে ১৩ শতাংশ হারে কমছে। সুতরাং উচ্চ খরচে বিদু্যৎ উৎপাদনের দিকে অধিক মনোযোগী না হয়ে সৌরবিদু্যৎ প্যানেল বসানোর দিকে আমাদের গুরুত্ব দেয়া উচিত। এর ফলে জাতীয়ভাবে অর্থনীতির সাশ্রয় হবে।