আক্রান্ত লাখ ছাড়াল করোনাভাইরাস রোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হিসাবে শনাক্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। উলেস্নখ্য, সংক্রমণের ১০৪তম দিনে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জনের। এছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন ১ হাজারের বেশি মানুষ। বলা দরকার, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। ফলে ১০৪তম দিনে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়াল এই বিষয়টিকে আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন। আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ইতিমধ্যে ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। কার্যত বিশ্ব থমকে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হয়েছে এবং তা আবার শিথিলও করা হচ্ছে। দেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে ক্রমাগত। সঙ্গত কারণেই এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, করোনা রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি রাখার বিকল্প নেই। যেখানে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও সামগ্রিক প্রস্তুতির বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটা মনে রাখতে হবে, আতঙ্ক বাড়ছে ক্রমাগত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কার্যত পুরো বিশ্বই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দিশাহারা। ফলে দেশেও যখন দ্রম্নত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা যখন লাখ ছাড়াল তখন বিষয়টিকে সহজভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সর্বাত্মক প্রস্তুতি জারি রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আগে করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে সচেতন করা ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। উলেস্নখ্য, গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহানে নতুন ধরনের একটি ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ নামের এই ভাইরাসটির সংক্রমণকে বিশ্ব মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। চীন থেকে ছড়ানো চীনের দুই প্রতিবেশী দেশে কোভিড মোকাবিলায় দুর্দান্ত সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। এর একটি ভিয়েতনাম। দেশটির সঙ্গে চীনের সীমান্ত রয়েছে। চীনের আরেক সীমান্তবর্তী দেশ নেপাল, যদিও সে সীমান্ত অতি দুর্গম; তারপরও দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর করোনায় মারা গেছেন মাত্র ২০ জনের মতো। এসব দেশের সরকার কঠোর বিধিনিষেধ পালন করতে দেশটির জনগণকে বাধ্য করেছে। করোনা সম্পর্কে নানান ধরনের প্রচার চালিয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি কার সংস্পর্শে এসেছিল তা শনাক্ত করতেও সমর্থ হয়েছে। সে কারণে দুর্বল স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়েও নেপালে রোগটি এখন পর্যন্ত বড় আকারে দাঁত বসাতে পারেনি এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। অন্যদিকে দুনিয়ার সব থেকে সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র কোভিডের কাছে পুরোটাই ধরাশায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্য মতে, কোভিড সংক্রমণের শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছে ২২ জানুয়ারি। ১ লাখ কোভিড আক্রান্ত হতে সময় লেগেছে দেশটির ৬৫ দিন। আমরা বলতে চাই, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়ল এবং মৃতু্য হাজার পেরিয়ে গেছে। ফলে এখনই সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। একই সঙ্গে জোনভিত্তিক লকডাউনের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, সারাবিশ্বই কার্যত করোনার কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। আর এই মহামারি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি ভিন্ন কোনো পথ নেই। ফলে যে সংকটগুলো সামনে আসছে তা আমলে নিতে হবে এবং প্রত্যেকেই যেন সচেতন হয় সেই বিষয়কে সামনে রেখে উদ্যোগী হতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের প্রচেষ্টা জারি রাখবে এমনটি কাম্য।