করোনাকালে ডেঙ্গু আতঙ্ক কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাকালে রাজধানীতে ডেঙ্গু আতঙ্ক শুরু হয়েছে। ডেঙ্গু হানা দিতে শুরু করেছে। ফলে মানুষের মধ্যে বাড়তি আতঙ্ক শুরু হয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন স্থাপনার ৬৭ ভাগই এডিস মশার প্রজননে সহায়ক। আর স্থাপনাগুলোর মধ্যে প্রায় এক দশমিক দুই ভাগ স্থাপনায় পাওয়া যায় এডিস মশার লার্ভা। ডিএনসিসির সব ওয়ার্ডে ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান থেকে উঠে আসে এমনই তথ্য। এবারই প্রথমবারের মতো, অভিযানে বিভিন্ন স্থাপনায় এডিস মশার প্রজননে সহায়ক অবস্থা এবং লার্ভা পাওয়া স্থাপনার তথ্য মোবাইল অ্যাপে সংরক্ষণ করে করপোরেশন। অভিযান শেষে এই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যেসব স্থাপনায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে এরমধ্যে ৬৭ ভাগ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন সহায়ক পরিবেশ বিদ্যমান। আর অভিযান পরিচালিত হওয়া স্থাপনাগুলোর মধ্যে এক দশমিক দুই ভাগ স্থাপনায় সরাসরি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। উলেস্নখ্য, গত বছরে ডেঙ্গু জ্বরে সরকারি হিসাবে ১৭৯ জনের মৃতু্য হয়েছে। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরও বেশি। গত বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল, মৃতু্যর সংখ্যাও ছিল বেশি। গত মৌসুমে ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজারের বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছিল। চিকুনগুনিয়ায়ও আক্রান্ত হয়েছিল রাজধানীবাসী। এবার সে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না বলেই আমরা মনে করি। আমরা এও মনে করি, দুই সিটি করপোরেশন ও সরকার যদি এডিস মশা নিধনে আগে থেকেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা হলে এবার মানুষ আক্রান্ত কম হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল মৌসুমভিত্তিক নয়, এডিস মশা নিধনে বছরব্যাপী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কারণ জনগণের জীবন রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব। এটা সত্য, করোনার এই মহামারিকালে ডেঙ্গুর থাবা বিস্তৃত হলে মানুষের মধ্যে বাড়তি উদ্বেগ সৃষ্টি হবে। যা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। আমরা আশা করব, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রোধে মশা নিধনের বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গড়ে তোলা হবে নাগরিক সচেতনতা। এটা সবাই জানে, ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা। বর্ষা মৌসুমে ছাদে বা ফুলের টবে পানি জমে থাকলে তা এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। ফলে দিনের বেলায় যাদের ঘুমানোর অভ্যাস তাদের জন্য এডিস মশার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। গত বছর ডেঙ্গুর আগ্রাসন বাড়ার কারণে জনমনে ব্যাপকভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এবার দেশ করোনা সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে। ফলে সঠিকভাবে মশক নিধনের বিষয়টি চাপা পড়ে যাচ্ছে। দুই সিটি করপোরেশনের উচিত আগে থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও ওষুধ ছিটানোর কাজটি ব্যাপকভাবে শুরু করা। পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে। তবে এ ক্ষেত্রে নাগরিক সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই।