এবারের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে কিছু কথা

চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে অভূতপূর্ব সফলতার নজির রেখেছেন। এ দেশের উন্নয়ন এত সহজেই হয়নি। বহু ত্যাগ, কষ্ট, ঘাত-প্রতিঘাত এবং বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করেই শেখ হাসিনাকে এই সাফল্যের মুখ দেখতে হয়েছে। করোনার মহাসংকটে দেশ বিপর্যস্ত হলেও তার পরও তিনি যে সামনে চলার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন, জনগণের উচিত তার ওপর ভরসা রাখা। ইনশালস্নাহ আবার ফিরে পাব হাসি-আনন্দের বাংলাদেশ। জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার রূপকার।

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২০, ০০:০০

ডা. এস এ মালেক
আগামীর কাঙ্ক্ষিত ভিত রচনা করে করোনা মহামারির কারণে ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যয়ে জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরের মেগা বাজেট। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে মানুষকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি তাদের অন্ন, বস্ত্র জোগাতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে এ বাজেটে। 'অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা' শিরোনামে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই বাজেট সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি। অর্থনীতির ঘোর অমানিশা কাটাতে এবারের বাজেটে কালো টাকা ঢালাওভাবে সাদা করার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো, বৈদেশিক ঋণের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ঋণ গ্রহণ, বিসালসামগ্রী ও তামাকজাতীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ঘাটতি পূরণে। অন্যদিকে অভাবগ্রস্ত, বেকার, চাকরি হারানোসহ নানা কারণে আয় কমে যাওয়া মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। দেশের ৪৯তম, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের ২১তম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় বাজেটে কমানো হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্যের দামও। করোনা বিপর্যস্ত দেশের মানুষের কথা মাথায় রেখে ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের আশায় এবারের বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রস্তাব করা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ১ কোটি ৮৯ লাখ ৯৯৭ কোটি টাকা। মোট আয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব ৩ কোটি ৭৮ হাজার ৩ কোটি টাকা। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৮.২০% এবং মুদ্রাস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫.৪%। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী মহল, এফবিসিসিআই, সিপিডি, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বাজেটের পক্ষে ও বিপক্ষে মন্তব্য করছেন। অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ এই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের ধারণা রাজস্ব আয়ের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা অর্জন সম্ভব নাও হতে পারে। কেউ কেউ এই বাজেটকে কল্পনাবিলাসী বলে আখ্যায়িত করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন করোনার মতো ভয়াবহ মহাদুর্যোগ মোকাবিলা করে উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে হলে যে ধরনের সাহস ও কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন, বাজেটে তার বহির্প্রকাশ ঘটেছে। তবে বাস্তবায়নপর্যায়ে কর্মকৌশলগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যে ধরনের দক্ষ ও যোগ্য হলে এ ধরনের বেশকিছু উচ্চাভিলাষী বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়, সেই ধরনের গতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারলেই উচ্চাভিলাষী বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। প্রশাসনের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে হলে দুর্নীতিকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, ধনী-দরিদ্র বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই এই মহামারি করোনাসৃষ্ট মহাবিপর্যয়ের পর যে বাজেট তারা পেশ করতে যাচ্ছেন; তার প্রতিটি ক্ষেত্রেই করোনাসৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করার সফলতা অর্জন করেই তা করা সম্ভব। করোনার প্রভাবমুক্ত বাজেট কোনো দেশের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়। বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা করোনার জন্য থোক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় এটা যথেষ্ট না হলেও জাতীয় অর্থনীতির সামর্থ্যর কথা বিবেচনায় নিয়ে খুব কম বরাদ্দ নয় এটা। সঠিকভাবে এই অর্থ ব্যয় করতে পারলে করোনাসৃষ্ট বেশকিছু সংকট দূর করা সম্ভব হবে। এই ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াও বিকল্প আরও ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সরকার প্রথম থেকেই যথাযথ দায়িত্ব নিয়েই করোনার কারণে অভুক্ত প্রায় ৭ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েক কোটি লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। কর্মহীনদের কর্মের ব্যবস্থা না করতে পারলে দারিদ্র্যের হার বেড়েই চলবে। বাজেটে করোনাসৃষ্ট সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। তাতে সঠিকভাবে ব্যয় করা হলে করোনা মোকাবিলাসহ স্বাস্থ্যব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি করা সম্ভব। গত অর্থবছরের চেয়ে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। একথা সত্য আমাদের দেশে হঠাৎ করোনার সৃষ্ট মহাবিপর্যয় মোকাবিলার যথেষ্ট শক্তি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা আমাদের ছিল না। যে কারণে প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, তার অনেক ভুল-ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়েছে। অনেকে এককভাবে সরকারকে দোষারোপ করছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের সক্ষমতার অভাব পরিলক্ষিত হলেও এটা সরকারের ঘাড়ে দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই। আমাদের দেশের চলমান বাস্তবতাকে মেনে নিতেই হবে। করোনাসংকট নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা ও রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদ্বয় বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। অনেকের কথা-বার্তায় মনে হচ্ছে যেন প্রধানমন্ত্রী একাই সব করছেন। আর কারও কোনো দায়িত্ব নেই। আমলানির্ভরতা দিন দিন বাড়ছে ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের অংশগ্রহণের সুযোগ কমছে। সম্প্রতি বিদেশের প্রচার মাধ্যমেই এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু দিকনির্দেশনা ও নির্ধারিত নীতি ঘোষণা ছাড়া কোন কাজটি প্রধানমন্ত্রী এককভাবে করছেন? সব কিছুতেই নির্ধারিত কমিটি রয়েছে। তারা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। টেলিভিশনের পর্দায় দেখি বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে একমত নন। কেউ কেউ দায়িত্ব থেকে নিজেই নিজের সমালোচনা করছেন। বিবিসির মতো আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমেও বলা হয়েছে, করোনার মোকাবিলায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি ত্রাণ বিতরণেও জনপ্রতিনিধিদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা তো ভিন্ন। সবাইকে সমন্বিত করে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ যদি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালনে এগিয়ে না আসেন, তিনি তো পিছনে থাকবেনই। আর যেখানে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের মুখ্য দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা, তাদের সে দায়িত্ব পালন করতে হলে অবশ্যই মাঠ প্রশাসনে তৎপরতা দেখাতেই হবে। বাজেটে অপেক্ষাকৃত দুর্বল শ্রেণির মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান সংখ্যার সঙ্গে আরও ১১ লাখ মানুষকে সংযুক্ত করা হয়েছে। নতুন করে ৫ লাখ বয়স্ক ভাতা, সাড়ে ৩ লাখ বিধবা ভাতা, ২ লাখ ৫০ হাজার প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা সামাজিক নিরাপত্তার কাজে বরাদ্দ দিয়ে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতেও গত বছরের চেয়ে এবার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। করোনার প্রভাবে যারা নতুন করে দারিদ্র্য ও বেকারত্বের নিপতিত হয়েছেন, এ কারণে ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ ঢালাওভাবে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেছেন। নিশ্চয়ই নৈতিকতার প্রশ্নে এটা সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু বাস্তবতা কী বলছে। হাজার হাজার কোটি কালো টাকা চলমান অর্থনৈতিক স্রোতের বাইরে থেকে জাতীয় উন্নয়নে অবদান না রেখে অপতৎপরতায় সক্রিয় হয়ে যে সামাজিক সংকট সৃষ্টি করছে; তা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কালো টাকা সাদা করার কোনো বিকল্প নেই। জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দিচ্ছে অথচ উন্নয়ন খাতে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই টাকা সাদা কি কালো তার বাদ-বিচার না করে বিনিয়োগের সুযোগ দিলে মূল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা সম্ভব হবে। আগের মতো এ বাজেটে ১০% টাকা জরিমানা দিয়ে ৯০% টাকা মূল অর্থনীতিতে প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এটা অবশ্যই সরকারের একটা ভালো দিক। তা ছাড়া প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ হলে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি শক্তিশালী হবে। করোনার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কৃষি, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশে যেখানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রতি ইঞ্চি জমিকে ব্যবহার করতে হবে। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। হয়েছে বলেই সরকার যেখানে যতটা খাদ্য সহায়তা করা দরকার, তা করতে পারছেন। এবারের মহামারির প্রকৃতির ভিন্ন হলেও দুর্যোগ তো বাংলাদেশের নিত্যসঙ্গী। তাই কৃষি ও কৃষিভিত্তিক খাতকে অগ্রাধিকার দিতে কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকি ও বরাদ্দ মিলে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চাষাবাদ করতে পারলে খাদ্যের কোনো ঘাটতি আমাদের থাকবে না। বাজেটে প্রশাসনিক ব্যয় মেটাতে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ আছে। যা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির চেয়েও বেশি। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হলেও দুর্নীতি, দায়িত্বহীনতা, অযোগ্যতা ও কর্তব্য অবহেলার কারণে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন থেকে জনগণ যে ধরনের সেবা ও সুযোগ-সুবিধা পাওয়া উচিত ছিল, তা পাচ্ছে বলে মনে হয় না। এবার প্রশাসনকে বিরাট অঙ্কের ঘাটতি পূরণ করে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তাহলে কেবল রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে এবং প্রতিবারের মতো সম্পূরক বাজেটে অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করা বা কমানোর প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশের জনদরদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী দুজনই আত্মপ্রত্যয়ের মাত্রা এত অধিক যে, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবেই। মনে হয় আগামী প্রবৃদ্ধির হার ৮.২০% বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন, অন্তত তার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারাটাও হবে এক অসাধারণ সাফল্য। এশিয়ার অন্যদেশগুলোতে এ ধরনের সাফল্য অর্জিত হবে বলে মনে হয় না। বছরের শেষে বাজেটের কাটছাঁট কোনো দোষের কিছু নয়। সরকার আপদকালীন পরিস্থিতিতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। করোনার মহাবিপর্যয়ের কারণে স্বাস্থ্য খাত, প্রতিরক্ষা খাত ও দুর্যোগ এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য অতিরিক্ত ৩ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পরিশেষে এই কথা বলেই আমার লেখার ইতি টানছি, বাজেট ঘাটতি বা উদ্বৃত্ত বাজেট কোনটা অধিকরতর কার্যকরী ও ফলপ্রসূ তা অর্থনীতির সংজ্ঞায় বলা কঠিন। তবে বাজেট বাস্তবায়ন সক্ষমতা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয়। বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ দিতেই হয় এজন্যই যে, জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন নিয়ে যখন নানামুখী মতামত আসছে, তখন সরকার একটা গণমুখী ও জনকল্যাণকামী বাজেট জাতিকে উপহার দিয়েছেন। তাই বাজেট সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে অবশ্যই জনপ্রত্যাশা ও জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে সরকার যে অঙ্গীকারবদ্ধ, তা এই বাজেটে প্রতিফলিত হয়েছে। সমালোচনাকারীরা তো সমালোচনা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে এ কথা সত্য বর্তমান সরকার স্বনির্ভর অর্থনীতি, জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন এবং শোষণ-বৈষম্যহীন এবং ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, সমাজ নির্মাণে বদ্ধপরিকর, তা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের নেত্রী। তার যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বের কারণেই দেশ আজ দ্রম্নত এগিয়ে চলেছে। অতীতে সব সরকারের সময় সমানভাবে উন্নয়ন হয়েছে, এ কথা বলা যাবে না। সফলতার এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সরকার সক্ষম হতো, যদি করোনার এই মহাবিপর্যয় আমাদের দেখা না দিত। আমাদের দুর্ভাগ্য তবে শুধু আমরা কেন, আজকে বিশ্বসমাজ আজ মহাবিপর্যয়ের মধ্যদিয়ে চলছে। শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশের এত উন্নয়ন হয়েছে, এটা স্বীকার করতে হবে। চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে অভূতপূর্ব সফলতার নজির রেখেছেন। এ দেশের উন্নয়ন এত সহজেই হয়নি। বহু ত্যাগ, কষ্ট, ঘাত-প্রতিঘাত এবং বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করেই শেখ হাসিনাকে এই সাফল্যের মুখ দেখতে হয়েছে। করোনার মহাসংকটে দেশ বিপর্যস্ত হলেও তার পরও তিনি যে সামনে চলার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন, জনগণের উচিত তার ওপর ভরসা রাখা। ইনশালস্নাহ আবার ফিরে পাব হাসি-আনন্দের বাংলাদেশ। জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার রূপকার। ডা. এস এ মালেক : রাজনীতিক ও কলাম লেখক