শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চালের দাম বৃদ্ধি বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন

নতুনধারা
  ২২ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনার মতো মহামারিতেও বোরোর বাম্পার ফলনের মধ্যে ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন চালকল মালিকরা, যার প্রভাবে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম অন্তত দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে সর্বোচ্চ চার টাকা বা ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে শুক্রবার ৫৪ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হয়। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা কেজিতে সর্বোচ্চ তিন টাকা বা ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা এবং মোটা চাল অন্তত দুই টাকা বা ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে কেজিতে ৩৮ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোটামুটি মাসখানেকের ব্যবধানে চালকল মালিকরা ৫০ কেজি চালের বস্তার দাম অন্তত ২০০ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছেন। চালের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে মিল মালিকরা বলছেন, সরকার এবার বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের জন্য দাম বেঁধে দেওয়ার পর থেকে 'ধানের বাজার চড়া' হওয়ায় চালের দাম বেড়েছে। তবে তাদের এই যুক্তির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ প্রতিবছরই সরকার ধান সংগ্রহের জন্য দাম বেঁধে দেয়, এটা নতুন কিছু নয়। আর এবার বোরোর যে দাম ধরা হয়েছে, গতবারও তাই ছিল।

আমরা মনে করি, হঠাৎ করে চালের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। বিক্রেতাদের অভিমত 'আমরা বেশি মূল্য দিয়ে কিনলে কম মূল্যে বিক্রি করব কীভাবে?' বেশি মূল্য দিয়ে কিনেছে নাকি কম মূল্য দিয়ে তাদের এই বক্তব্য কি প্রমাণ সাপেক্ষ। তারা যে অজুহাত তুলেছে তা অত্যন্ত পুরনো।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে ভাতপ্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে তবে, এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্পআয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক, এই করোনাকালে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানুষিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং এর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ২৫০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চালের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানুষিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিক্রেতাদের মানুষিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<103278 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1