শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা ছাড়ছে উপার্জনহীন মানুষ

সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে
নতুনধারা
  ২৪ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাস এক মহা আতঙ্কের নাম। এ এক অদৃশ্য আততায়ী। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বে আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আগে সারা বিশ্বে একদিনে এক লাখ আক্রান্ত হতো, এখন সে সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে, মৃতু্য হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষের। দেশ টানা ৬৬ দিন লকডাউনে থাকার পর সীমিত পরিসরে সব কিছু খুলে দেওয়া হলেও ব্যবসা অফিস আগের মতো জমছে না। ফলে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়েছে দেশ। ইতিমধ্যে অনেকেই চাকরি হারিয়েছে। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে মানুষ বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর নিম্নআয়ের মানুষের অবস্থা খুবই করুণ। তাদের উপার্জনের কোনো রাস্তা নেই। শহরের নিত্য ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে বাধ্য হয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন হাজারও কর্মহীন মানুষ। তারা ফিরছেন একেবারে নিঃস্ব হয়ে। প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা যায়, মালপত্র ভর্তি বাহনে করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। তাদের মধ্যে কেউ দিনমজুর, কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কেউ গার্মেন্ট শ্রমিক, ছাত্র-প্রাইভেট শিক্ষক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ। একদিকে যেমন সব ছেড়ে মানুষ গ্রামে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে আরেক দিকে বাসা ছেড়ে অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ার বাসা খুঁজছেন অনেকে। সাধারণ ছুটি শেষ হলে যদি আবার সব স্বাভাবিক হয় এই আশায় ঢাকায় ছিলেন অনেকেই। কিন্তু তিন সপ্তায় অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। অনেকেই নিরুপায় হয়ে খাবারের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতছে। এই শহরে কখনও খাবারের জন্য হাত পাততে হবে ভাবেনি তারা, করোনা তাদের এই প্রান্তিক পরিস্থিতিতে নিয়ে এসেছে। অনেকের বাসাভাড়া তিন মাসের বাকি, যারা দোকান চালায় তাদের দোকান ভাডাও একই অবস্থায়। এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কেবল ভাড়া দিতে না পেরে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। অচিরেই এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই সুখকর নয়। মূলত রাজধানীর নিম্নআয়ের মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে তারা রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন। অথচ একদিন স্বপ্ন নিয়ে তারা রাজধানীতে এসেছিল। যারা সপরিবারে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছে, গ্রামে গিয়েও যে তারা সুবিধা করতে পারবে তেমনটা মনে হয় না। কারণ গ্রামে উপর্জনের রাস্তা অবারিত নয়। যাদের নিজস্ব কিংবা পৈত্রিক জমি রয়েছে তাদের কথা আলাদা। তারা হয়তো শাকসবজি ফলিয়ে মাছ চাষ করে টিকে থাকতে পারবে। কিন্তু যাদের এ সুযোগ নেই তারা কী করবে। গ্রামে গিয়ে শহরের মতো ব্যবসা দাঁড় করানো সহজ কাজ নয়।

আসলে করোনাকালে মানুষ পড়েছে বিপাকে। তাদের এখন বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা বাড়ি ভাড়ার মাধ্যমে সংসার চালাতো তাদের অবস্থাও সঙ্গিন। কারণ করোনাকালে একদিকে তারা নিয়মিত ভাড়া পাচ্ছেন না, অন্যদিকে অনেকে বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চলে গেছে, খালি বাসা আর ভাড়া হয়নি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের আপাতত কোনো পথ খোলা নেই। অর্থনৈতিক মন্দাভাব কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। এ ক্ষেত্রে সরকার সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারে, এগিয়ে আসতে পারেন স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরাও। সে প্রত্যাশাই আমরা করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<103487 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1