বাড়তি দামে ওষুধ বিক্রি দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাহিদা বেড়েছে ভিটামিন সি, জিংক জাতীয় ভিটামিনের। জ্বর, গায়ে ব্যথার ওষুধের চাহিদাও রয়েছে শীর্ষে। দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এসব ওষুধ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নার ফার্মেসিগুলোর চিত্র প্রায় একই। অজুহাত হিসেবে বলা হচ্ছে ওষুধের সরবরাহ সংকটের কথা। কোম্পানি দাম না বাড়ালেও দোকানিরা দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে। অন্যদিকে কোনো কোনো দোকানি প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেটর দামও বেশি রাখছেন। তবে সর্দি-কাশির ওষুধের দাম রাখা হচ্ছে আগের মতোই। কোভিড-১৯ এর কারণে ভিটামিন সি'র চাহিদা ও কদর বেড়েছে। আর এর সুযোগ ব্যবহার করে মহলস্নার দোকানগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনাকালে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে এসব ফার্মেসি। দোকানে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকা সত্ত্বেও তারা ক্রেতাদের সরবরাহ সংকটের কথা বলে ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে। এটা বড় ধরনের অপরাধ। মনে রাখতে হবে করোনাকালে চারদিকে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে। দেশের মানুষ রয়েছে অর্থনৈতিক সংকটে। অনেকের হাতেই পর্যাপ্ত নগদ টাকা নেই। এই দুর্যোগকালীন অবস্থায় যদি ওষুধের দাম বেশি রাখা হয়, তা হলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে? করোনাকালের আগে বাজারে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। তখন থেকেই বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও ফার্মেসিভেদেও দামের মূল্য পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিগুণও রাখা হয়- যা রীতিমতো অন্যায়। এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, দেশে বেসরকারিভাবে পরিচালিত ২৬৯টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি প্রায় ২৪ হাজার আইটেমের মেডিসিন উৎপাদন করে থাকে। এর বাইরে সরকারিভাবে উৎপাদিত হয় ১১৭ ধরনের ওষুধ- যার দাম নির্ধারণ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ওষুধ রপ্তানি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ফলে পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ রপ্তানি কারক দেশে পরিণত হয়েছে এ দেশ। আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১৫১টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। উৎপাদনভিত্তিক ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি বাড়ায় এ খাতের যথেষ্ট উন্নতি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এই খাতের উন্নতি বেশ দৃশ্যমান। এই ইতিবাচক খবরের মধ্যে এভাবে অযৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। মেনে নেয়া যায় না করোনাকালে ওষুধের বাড়তি দাম রাখাও। এটা জনগণকে জিম্মি করার শামিল। এদের নেই কোনো ধরনের মানবিক বোধ। এদের কাছে অর্থই প্রধান। এভাবে যদি ওষুধের দাম লাগামগীন বাড়তেই থাকে এবং নেয়া হয় বাড়তি দাম তা হলে সাধারণ রোগী, যারা স্বল্পআয়ের এবং যারা প্রবীণ অবসরে আছেন তাদের অবস্থা কী হতে পারে একবার ভেবে দেখা জরুরি। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। যারা বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।