আজকের যায়যায়দিন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। দেশেও বাড়ছে সংক্রমণ এবং মৃতের সংখ্যা। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বর্তমান সময়টা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে- যা যথাযথভাবে মোকাবিলা করার বিকল্প নেই। উলেস্নখ্য, গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার বক্তব্যে করোনাভাইরাস যে বিশ্বব্যাপী একটি সমস্যা এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, এ থেকে মানুষকে রক্ষা করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, মানুষ যাতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রেখেই মুজিববর্ষ উদ্‌যাপনের সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া জনগণের কল্যাণটাই যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয়টিও তিনি বলেছেন।

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, আজ পুরো বিশ্বই যেমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি, তেমনি দেশেও করোনার সংক্রমণে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা যেমন লাখ ছাড়িয়েছে, তেমনিভাবে আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন এক হাজার ৫শ'র বেশি মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই এ পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। আর এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, করোনাভাইরাসের কারণে দুঃখকষ্ট মানুষের মধ্যে আছে। আর এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন- যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই আমরা মনে করি।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস। এর পর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন অবস্থায় সরকার কৃর্তক নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বারবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অপ্রয়োজনে ঘোরাঘুরি না করাসহ নানা ধরনের বিধিনিষেধ এসেছে। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সামনে রেখে বর্তমান এই দুঃসময়ে মানুষকে সচেতনতা করা, অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে সামগ্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, একদিকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। অন্যদিকে দেশেরও সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। আমরা মনে করি, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যাগ অব্যাহত রাখা অপরিহার্য। মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেটি নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে যে, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও সামগ্রিক প্রস্তুতি কতটা তা খতিয়ে দেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন। একদিকে বাড়ছে আতঙ্ক, অন্যদিকে করোনাভাইরাসের কারণে দিশেহারা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশে যখন আক্রান্ত লাখের বেশি এবং মৃতু্য দেড় হাজার ছাড়িয়েছে তখন বিষয়টিকে সহজভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফলে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সর্বাত্মক প্রস্তুতি জারি রাখতে হবে। এর আগে এমন বিষয়ও সামনে এসেছে যে, কাঁধে হাত রেখে গল্প করা, কেউ কেউ মুখে মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখাসহ নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দূরত্ব মানছেন না অনেকেই। ফলে এই ধরনের ঘটনার মধ্য দিয়ে অসচেতনতা ফুটে উঠেছে- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

তীব্র তাপপ্রবাহ ও জনসচেতনতা

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বর্তমান বাস্তবতা অনুধাবন করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই একইসঙ্গে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই দুঃসময় মোকাবিলায় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখতে হবে। করোনা মোকাবিলায় দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রেখে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে জোনভিত্তিক লকডাউনের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, এই মহামারি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি ভিন্ন কোনো পথ নেই। ফলে যে সংকটগুলো সামনে আসছে তা আমলে নিতে হবে এবং প্রত্যেকেই যেন সচেতন হয় সেই বিষয়কে সামনে রেখে উদ্যোগী হতে হবে। করোনাভাইরাস রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।