সংগ্রাম ও সাফল্যের পথ চলা

দেশে ফিরে তিনি দলের হাল ধরেন। শুরু হয় আরেক সংগ্রামী জীবন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আজকের অবস্থানে তিনি দলকে দাঁড় করিয়েছেন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দল ও সরকারের নেতৃত্বে থেকে বাংলাদেশের জন্য বড় বড় অর্জনও বয়ে এনেছেন তিনি। আধুনিক বাংলাদেশের স্বার্থক রূপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২০, ০০:০০

ডা. এস এ মালেক
২৩ জুন ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। রাজনৈতিক দল হিসেবে বলা যায়, উপমহাদেশের সুপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ পর্যন্ত গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে দলটির নেতাকর্মীদের রয়েছে বিশাল সংগ্রাম-ইতিহাস। এ দেশের যা কিছু বড় বড় মহৎ অর্জন, তা অর্জিত হয়েছে, এই দলের নেতৃত্বে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিজয় অর্জিত হয়েছে। তাই আজ নিঃসন্দেহে বলা যায়, গণমানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। আজকের এই শুভক্ষণে আমি বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, যেসব নেতাকর্মীর, শুভানুধ্যায়ীর, সমর্থকের নিরলসভাবে পরিশ্রম, ত্যাগ, শ্রম ও মেধার বিনিময়ে দলটিকে বর্তমান অবস্থায় নিয়ে এসেছেন। আমি সর্বপ্রথম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে জাতীয় নেতারা সর্বজন শ্রদ্ধেয় হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে-বাংলা এ কে এ ফজলুল হক, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, আব্দুর রশিদ তর্কবাগীস ও শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ নেতাকে। তাদের আত্মত্যাগ ও অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আর যেসব নেতা শহিদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং যেসব নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থক আজও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। বঙ্গবন্ধুর যেমন বিশাল রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে, তেমনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রয়েছে ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ইতিহাস। তবে এ কথা ঠিক বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তা। কাউকে বাদ দিয়ে ইতিহাস লেখা যেমন অসম্ভব, তেমনই আর কোনো দিন লেখাও যাবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অনেকেই এসেছেন। কিন্তু দলকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে অনেকেই ব্যর্থ হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যখন দলের নেতৃত্বে আসেন, দল ফিরে পায় অফুরন্ত শক্তি ও গতি। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জাদুর কাছে সবাই হারমানে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ছোটবেলা থেকে শুরু হলেও তার প্রকৃত দীক্ষা ও হাতেখড়ি হয়েছিল কলকাতায়। উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় চলে আসা শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের জন্য বড় একটি মাইকফলক ছিল নিঃসন্দেহে। কলকাতা বিরাট শহর। সারা বাংলার রাজনীতি কলকাতা ঘিরেই আবর্তিত হতো। কলকাতার রাজনীতি এমনকি সমগ্র ভারতকে প্রভাবিত করত। শুধু রাজনীতি নয়, সাংস্কৃতিক দিক দিয়েও কলকাতা তখন প্রসিদ্ধ। তখন থেকেই বাঘা বাঘা নেতার সংস্পর্শে এসেই শেখ মুজিবুর রহমানের সামনে বিরাট এক পৃথিবীর দরজা খুলে গিয়েছিল। কিন্তু কলকাতা শুধু তাকে সমৃদ্ধই করেননি, অনেক দুঃখ দুর্দশাও দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, '৫০-র মন্বন্তর এবং দেশ ভাগের বিভীষিকা তিনি কলকাতা থেকেই প্রত্যক্ষ করেছেন। আর অনুভব করেছেন বঞ্চিত-দুঃখীদের দুঃখ-বেদনা। ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসের ৬ ও ৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় সিলেটের গণভোট। সিলেট আসামের সঙ্গে থাকবে এবং নতুন দেশ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে নাকি পূর্ব বঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন দেশ পাকিস্তানে যোগ দেবে এই প্রশ্নে গণভোটের ব্যবস্থা করা হয়। গণভোটে পাকিস্তানের পক্ষে শেখ মুজিব প্রায় ৫০০ কর্মীর একটি দলের নেতৃত্ব দেন। এই ভোটের পর পরই ভারত ভাগের আগমনে কলকাতায় ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এই দাঙ্গা দেশ ভাগের পর আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। শেখ মুজিবুর রহমান দাঙ্গা দমনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২-৩ দিন অনাহারে থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন বাস্তবে সে রকমটা যে হওয়ার নয়, সে কথা খুব দ্রম্নতই স্পষ্ট হয়ে যায় শেখ মুজিবুরের কাছে। '৪৬-র দাঙ্গা হাঙ্গামার তিক্ত অভিজ্ঞতা তাকে আরও বেশি হতাশ করে। তাই ১৯৪৭ সালের জুন মাসেই ইসলামিয়া কলেজের সিরাজুদ্দৌলা হলের ছাত্র, যুবক ও অন্য কর্মীদের এক গোপন বৈঠক ডাকেন। ততদিনে নিজের অন্তর্নিহিত প্রজ্ঞাবলে পাকিস্তানের অমানবিকতা ও অগণতান্ত্রিকতার বিষয়ে তার মতামত স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং তিনি তা প্রকাশও করেন। একইসঙ্গে তিনি মুসলিম লীগের ক্ষমতাসীন অংশের সঙ্গেও প্রগতিবাদী ছাত্র ও যুব কর্মীদের পার্থক্য চিহ্নিত করতে সচেষ্ট হতে বলেন তার কর্মীদের। ১৯৪২-৪৭ এর আগস্ট পর্যন্ত ৫ বছর সময়কে শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনের সূচনাকাল বলে চিহ্নিত করা হয়। বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের জন্যও সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় পাকিস্তান আন্দোলন ব্যাপক বিস্মৃতি লাভ করে ও সমাজের কর্তৃত্বেও পরিবর্তন আসে। এর পরিণতিতে ১৯৪৭ এ দেশ ভাগ হয়। বঙ্গবন্ধু মহান জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন স্বাধীনতা-সংগ্রামে অগ্রসেনানী বাঙালি জাতি ও জাতিসত্তার বিকাশে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তিনি একমাত্র নেতা, যিনি পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের বিষদাঁত ভেঙে চুর্ণবিচুর্ণ করে একক নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের মহান মুক্তির দেশারী। তিনি বাংলার মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখে ব্যথিত হতেন। পাকিস্তানের সামরিক শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদমুখী ছিলেন। ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন আন্দোলন, '৬৬-র ৬ দফাভিত্তিক আন্দোলন, '৬৯-র গণঅভু্যত্থান ও '৭০-র সাধারণ নির্বাচন এবং সর্বোপরি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ছিল মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা এবং শোষণ বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা। তাইতো তিনি ১৯৫৫ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামী লীগ থেকে তিনি মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক 'আওয়ামী লীগ' নামকরণ করেন। অনেক মুসলিম লীগ নেতারা ভুল তথ্য দিয়ে জাতিকে এখনো বিভ্রান্ত করেন। তাদের বক্তব্য মুসলিম লীগের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে আওয়ামী লীগ। কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পুরোধাপুরুষ হওয়ার কারণেই তিনি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়া গণমানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়েই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের অভু্যদয় ঘটে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতার নেতৃত্বে দেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে খুব অল্প সময়ে পরিচিতি লাভ করে। দেশ পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নীতি ও কর্মসূচি দ্রম্নত এগিয়ে চলে। কিন্তু বাঙালি জাতির জীবনে ক্রান্তিকাল ও কলঙ্কময় অধ্যায় রচিত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড। যে নেতার নেতৃত্বে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠিত হলো, সেই নেতাকে এ দেশের স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি ও তাদের দোষর এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের ষড়যন্ত্রে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন। মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন ধূলিসাৎ হতে থাকে। দেশ পরিচালিত হয় স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা। স্বৈরাচারের জাঁতাকলে দেশ নিপতিত হয়। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। দেশ পেছনের দিকে ধাবিত হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদ স্বাধীনতাবিরোধীদের রাষ্ট্রীয় মূল শক্তিতে পুনর্বাসিত করে। বেগম জিয়াও তাদের সেই পথ অনুসরণ করে। সামরিক শাসকরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রীয় মূলনীতিকে ক্ষতবিক্ষত এবং সংবিধানের মূল চরিত্রের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটায়। দীর্ঘদিন চলে তাদের অন্যায় কার্যক্রম। এ সময়ে জাতির পিতার অবদান ও কর্মকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছে। এই দুর্যোগময় ও সংকটময় মুহূর্তে জাতির ভাগ্য বিধাতা ও শান্তির দূত হিসেবে আবির্ভূত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালে দলীয় কাউন্সিলে দলের সভানেত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আজ পর্যন্ত ৩৯ বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন। এ দীর্ঘ সময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে কারাবরণ, জীবননাসের হুমকিসহ অনেক কঠিন পথ তাকে পারি দিতে হয়েছে। শেখ হাসিনাকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন। শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের ফলেই আওয়ামী লীগ ৪ বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন মাত্রা সূচিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নীত হয়েছে উন্নয়নশীল দেশে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যেই নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনে তিনি বসিয়েছেন। শেখ হাসিনা দলীয় ঐক্যের প্রতীক। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের স্বীকার হন দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রকট আকার ধারণ করে। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে দল। এ প্রেক্ষাপটে নির্বাসিত জীবনে ভারতে থাকাকালে ১৯৮১ সালে ফেব্রম্নয়ারিতে শেখ হাসিনা কাউন্সিলে সভাপতির দায়িত্ব পান। সেই থেকে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন ও দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দেশে ফিরে তিনি দলের হাল ধরেন। শুরু হয় আরেক সংগ্রামী জীবন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আজকের অবস্থানে তিনি দলকে দাঁড় করিয়েছেন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দল ও সরকারের নেতৃত্বে থেকে বাংলাদেশের জন্য বড় বড় অর্জনও বয়ে এনেছেন তিনি। আধুনিক বাংলাদেশের স্বার্থক রূপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা। ২৩ জুন উপ-মহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ৭১ বছর পূর্তি পালন করেছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ইয়ার মোহাম্মদ খানের রোজ গার্ডেনে দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হয়েছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, যুগ্ম সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তখন কারাগারে। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দল ছেড়ে চলে গেছেন ন্যাপ গঠন করে। প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি আতাউর রহমান খান থেকে সালাম খানরাও থাকেনি, সোহরাওয়ার্দীরও মৃতু্য হয়। মানিক মিয়াকে সভাপতি করতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। দলের দুঃসময়ে দলের নেতৃত্ব দেন সেই সময়ের তোখড় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। আন্দোলনের মাধ্যমে মুজিব পূর্ব বাংলায় জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাককালে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে লিখতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের ত্যাগী, সংগ্রামী পরীক্ষিত কয়েকজন নেতার মৃতু্যবরণ। চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে চিরদিনের জন্য মোহাম্মদ নাসিম, শেখ মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ ও বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান। এদের মৃতু্যতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। জাতি চিরদিন তাদের কর্ম ও অবদান মূল্যায়ন করবে। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা কামনা করছি। বিশ্ব আজ মহাবিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। মানবতার চরম বিপর্যয়। আমাদের দেশও করোনাভাইরাসে চরম সংকটে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এই সংকটকালে সাহসিকতার সঙ্গে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। সব শ্রেণিপেশার মানুষ রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং জনগণের উচিত এই মহাদুর্যোগে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসা। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, নিজে বাঁচুন ও দেশকে বাঁচান এই অনুরোধ জানাচ্ছি। এবার দেশে ও বিদেশে পালিত হচ্ছে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ। আমি আবারও ভাষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। সর্বোপরি আমাদের মহান নেতা, জাতির পিতা, স্বাধীনতার স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। ডা. এস এ মালেক : রাজনীতিক ও কলাম লেখক