অস্বাভাবিক বিদু্যৎ বিল ৬ পদক্ষেপের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গ্রাহকরা যদি ত্রম্নটিপূর্ণ বা অস্বাভাবিক বিদু্যৎ বিলের কাগজ পান স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ ধরনের সংকট নিরসন করা অত্যন্ত জরুরি। প্রসঙ্গত বলা দরকার, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। আর এরপর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আবাসিক গ্রাহকরা ফেব্রম্নয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিন মাসের বিল দেরিতে দিতে পারবেন। আর জুন মাসে বিল পরিশোধ করতে হবে এবং বিলম্বিত বিল পরিশোধে কোনো অতিরিক্ত জরিমানা নেওয়া হবে না। কিন্তু এই পুরো সময় বাসা-বাড়িতে বিলের কাগজ দেওয়া হয়নি। বিল জমা নেওয়াও বন্ধ ছিল। আর বিলের কাগজ দেওয়া শুরু হলে অতিরিক্ত বিলের বহু অভিযোগ তৈরি হয়। আমরা বলতে চাই, বিদু্যৎ বিলসংক্রান্ত যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে যখন সরকারে পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি সামনে আসছে, তখন তা ইতিবাচক। এখন এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে সমস্যা সমাধান হোক এটাই কাম্য। তথ্য মতে, বাড়তি বা ত্রম্নটিপূর্ণ বিল দ্রম্নত সংশোধনসহ করোনাকালে বকেয়া হওয়া বিদু্যৎ বিল আদায়ে ছয় দফা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। করোনার কারণে সৃষ্ট বিদু্যতের বকেয়া বিল আদায়ের লক্ষ্যে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, তা হলো কয়েক মাসের ইউনিট একত্র করে একসঙ্গে অধিক ইউনিটের বিল না করা; মাসভিত্তিক পৃথক পৃথক বিদু্যৎ বিল তৈরি করা; একসঙ্গে অধিক ইউনিটের বিল করে উচ্চ ট্যারিফ চার্জ না করা; ত্রম্নটিপূর্ণ বা অতিরিক্ত বিল দ্রম্নত সংশোধনের ব্যবস্থা করা; মে ২০২০ মাসের বিদু্যৎ বিল, যা জুন মাসে তৈরি হচ্ছে সেটা মিটার দেখে সঠিকভাবে প্রস্তুত করা এবং মোবাইল, বিকাশ, জি-পে, রবিক্যাশ, অনলাইনে ঘরে বসে বিদু্যৎ বিল পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি করা। আমরা মনে করি, পদক্ষেপগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একইসঙ্গে এ ধরনের ত্রম্নটিপূর্ণ বা অস্বাভাবিক বিল যেন ভবিষ্যতে না হয় সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, যদি এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তবে গ্রাহকদের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মনে রাখা দরকার, এর আগে এমন বিষয় খবরে প্রকাশ পেয়েছিল, মে মাসের মাঝামাঝি অনেকটা হঠাৎ করেই মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিল একত্রে গ্রাহকদের পাঠানো হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে মিটার রিডাররা এই বিল কোনো বাসায় না গিয়ে অনুমানের ভিত্তিতে তৈরি করেন। সঙ্গত কারণেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কতটা উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে সামনে আনে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই যে পদক্ষেপগুলো উঠে আসছে তার যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে গ্রাহকের ভোগান্তি ও দুশ্চিন্তা লাঘব হোক এবং বিল সংশোধন হোক এমনটি কাম্য। আমরা বলতে চাই, মিটার না দেখে বিল, বাড়তি বিল, কোনো বৈদু্যতিক সরঞ্জাম ব্যবহার না করেও কারখানায় আগের চেয়ে বেশি বিল- এরকম নানা অভিযোগ ইতিমধ্যে উঠে এসেছে। এছাড়া কারও কারও সাধারণ ছুটি চলাকালে তার সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকার পরও আগের থেকে বেশি বিদু্যৎ বিল এসেছে। এ ছাড়া এত গ্রাহকের তিন মাসের বিল সংশোধন কতটা সম্ভব হবে সেই প্রশ্নও উঠে আসছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বিল সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিল যেমন সংশোধন করতে বলা হয়েছে- তেমনি মাঠপর্যায়ের লোকজন যদি ঠিকমতো কাজটা করে, তাহলে সম্ভব, কিন্তু সেই চেষ্টাটা কোন লেভেল থেকে কতটুকু করা হবে সেই প্রশ্নও উঠে আসছে, যা আমলে নেওয়া দরকার। আর ত্রম্নটিপূর্ণ বিলের গরমিল সমাধান করতে না পারলে বিদু্যৎ বিতরণ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তি দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে। আমরা মনে করি দোষীদের শাস্তি হোক, এর পাশাপাশি এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপও নিশ্চিত হোক।