পাঠক-মত

করোনাকালে বাড়ছে বাল্যবিবাহ

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বর্তমানে বাল্যবিবাহ দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। বাল্যবিবাহ দু-চার দিন আলোচনা করে থেমে যাওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। সবকিছুই পরিবর্তন হলেও এটি বন্ধ হয়নি। এটি যেন দিনদিন বাড়ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ মানুষ ঘরে থাকায় বাড়ছে? বাল্যবিয়ে গ্রাম ও শহর সব জায়গার মানুষ বলতে গেলে ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলছে গোপনে বাল্যবিয়ের আয়োজন। বিশ্বের ৪০ লাখ কন্যাশিশুকে বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে ফেলেছে করোনা মহামারি। স্কুল বন্ধ থাকা, দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়াসহ করোনা সম্পর্কিত নানা কারণ বাল্যবিয়ের ঝুঁকির মুখে পড়েছে বিশ্বের বিপুলসংখ্যক কন্যাশিশু। একই সঙ্গে মেয়ে শিশুদের ওপর বিয়ের চাপও বাড়ছে। এ সময় করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় চলছে বাল্যবিয়ে। স্কুলগুলো মেয়েদের রক্ষা করে। স্কুল বন্ধ থাকলে তাদের বাল্যবিয়ের ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। লকডাউনের সুযোগে অনেক পরিবার যেমন তাদের মেয়েশিশুদের বাল্যবিয়ে দেবে, তেমনি এটি গোপন করারও সুযোগ পাবে। মহামারির কারণে যে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে তা থেকে বাঁচার জন্যও অনেক দরিদ্র পরিবার এই বাল্যবিয়ের আশ্রয় নেবে। এর মাধ্যমে তারা পরিবারের সদস্যসংখ্যা কমানোর চেষ্টা করবে। আর এসব বাল্যবিয়ের ফলে সমাজে যৌতুক লেনদেনেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাল্যবিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুখের হয় না। বাল্যবিয়ে দেশে মা ও নবজাতকের মৃতু্যর মূল কারণ ১৮ বছরের কম বয়সিদের মা হওয়া। কিশোরী মায়ের মৃতু্যঝুঁকি প্রাপ্তবয়স্ক মায়ের তুলনায় অন্তত চারগুণ বেশি। বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ কিশোরীর ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। বাল্যবিয়ের কারণে মায়ের কিংবা নবজাতকের মৃতু্যর ঝুঁকি নাবালিকা মেয়েদের মা হওয়া এবং শিশুকে পরিচর্যা করার জ্ঞান খুবই কম থাকে। ফলে মা ও শিশুর মৃতু্য ঘটতে পারে। অপরিণত বয়সে সন্তান জন্ম দিতে যাওয়া একই সঙ্গে বাল্যবিধবা ও বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যাও কম নয়। কিছু ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদের পর ছেলেমেয়ে ও তাদের পরিবারকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে হয়। কখনো এর প্রভাব আত্মহত্যার মতো ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দেয়। যে কোনো উপায়ে বাল্যবিয়ে রোধ হওয়া দরকার। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পদক্ষেপের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার। মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মা ও শিশুর মৃতু্যহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। মোহাম্মদ জীবন আহমেদ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, সিলেট